Home » প্রশাসন আশ্বাস দিলেও অদৃশ্য কারণে আলমডাঙ্গায় বন্ধ হচ্ছেনা অবৈধ পুকুর খনন

প্রশাসন আশ্বাস দিলেও অদৃশ্য কারণে আলমডাঙ্গায় বন্ধ হচ্ছেনা অবৈধ পুকুর খনন

কর্তৃক আবুল কাসেম অনুরাগী
সূর্যোদয় প্রতিবেদক 92 ভিউ
Print Friendly, PDF & Email

 

 

কোনভাবেই বন্ধ হচ্ছেনা আলমডাঙ্গার বেলগাছি গ্রামের বাদল, জলিল ও কিতাব আলি চক্রের অবৈধভাবে পুকুর খনন ও মাটি বিক্রয়ের ব্যবসা। একদিকে অবৈধ পুকুর খনন, অবৈধ ইটভাটায় মাটি প্রেরণ অন্যদিকে অবৈধ যানবাহনে মাটি বহন, কোথাও কাদামাটি কোথাও ধুলাবালি সব মিলিয়ে এক অস্বাস্থ্যকর অস্বস্থিমূলক চরম দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

জেলা প্রশাসন থেকে প্রতিশ্রুতি দিলেও কোন পদক্ষেপই নিচ্ছেন না আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রশাসন। আলমডাঙ্গা উপজেলার বেলগাছি ইউনিয়নের বেলগাছি গ্রামের শেখ পাড়ার বাদল ও জলিল চাচা ভাতিজার জমিতে অবাধে চলছে অবৈধভাবে পুকুর খননের নামে ইটভাটায় মাটি ও বালি বিক্রির কাজ। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে
গত সোমবার সরজমিনে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে দেখা যায় এক্সেভেটর মেশিন দিয়ে পুকুর খনন করে মাটি কেটে ট্র্যাকটর ও লাটাহাম্বায় করে বিভিন্ন ইটভাটায় মাটি সরবরাহ করা হচ্ছে।

এব্যাপারে পুকুর মালিক বাদলের মোবাইল ফোনে পুকুর খননের বিষয়ে জেলা প্রশাসন থেকে অনুমতি আছে কিনা জানতে চাইলে, তিনি বলেন আমি পুকুর খননের জন্যে উপজেলায় আবেদন করেছি এখনও পর্যন্ত অনুমতির কাগজ হাতে পাইনি আরও বলেন আপনি আমাদের পুকুর খননের বিষয়ে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করেছেন আজকে আবার ভিডিও ছবি করে নিয়ে গেছেন। কিসের সাংবাদিক আপনি? আবার যদি সংবাদ প্রকাশ হয় তাহলে আপনাকে দেখে নেব বলে হুমকি দেয় বাদল।

৩ মার্চ ২০২৪ সালে স্থানীয় অন্য একটি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় সাংবাদিকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে বেলগাছি ইউনিয়নের বেলগাছি শেখ পাড়ার হামিদ মন্ডলের ছেলে বাদল। মাটি ব্যবসায়ী একই গ্রামের কিতাব আলি ফোন করে বলেন, পুকুর খননের কন্টাক নিয়েছি আমি। আমার কাছে ফোন দেবেন। বাদলের কাছে কেনো ফোন দিয়েছেন? আমি বেলগাছি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান চঞ্চল ও তার ভাই হিমেলের নির্দেশে পুকুর খনন করছি। উল্লেখ্য চেয়ারম্যান মাহামুদুল হাসান চঞ্চলও ডামোশে তার নিজের পুকুর খনন করছে বলে স্বীকার করেন। তবে তিনি নিজ পুকুর পূনঃ খননের দাবি করেন। এলাকাবাসি জানায়, দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় অনেক পুকুরে মাছ চাষ করে আসছেন চেয়ারম্যান।

বেলগাছি ইউপি চেয়ারম্যান মাহামুদুল হাসান চঞ্চল মোবাইল ফোনে জিজ্ঞেস করলে বলেন, কিতাব আমার কর্মী। হামিদ মন্ডলের ছেলে বাদল ও তাঁরাচাদ মন্ডলের ছেলে জলিলের জমি কিতাব কন্টাক নিয়ে পুকুর খনন করছে আমার নাম ভাঙ্গিয়ে। কিন্তু এবিষয়ে আমি জড়িত না ।

অবৈধ ভাবে মাটি খনন এই চক্র প্রভাবশালী হওয়ায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা বলেন, পাকা রাস্তার উপরে বেহাল অবস্থা হয়েছে। ট্রাকটর ও লাটাহাম্বায় করে মাটি কেটে বিভিন্ন ইটভাটায় নিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তার উপরে কাঁদা মাটি বালি পড়ে যানবাহন ও সাধারণ মানুষের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে রাস্তা। পাকা রাস্তায় কাঁদা মাটি পড়ার কারণে যখন তখন বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে বলে আশঙ্কা তাদের। আবার যেসব ড্রাইভাররা গাড়িতে করে মাটি বহন করছে সেসব ড্রাইভার এবং গাড়ির অধিকাংশেরই নাই কোনো অনুমোদন নাই কোনো লাইসেন্স। নাই কোনো প্রশিকষণ। শুধু কি তাই! কোথাও কোথাও অনবরত এই অবৈধ গাড়ি চলার কারণে ধুলাবালি উড়ে মানুষের নিশ্বাস নিতে যেনো দম বন্ধ হয়ে আসছে। ফলে এলার্জি, হাঁচি-কাশি, ঠান্ডা এ্যাজমা প্রভৃতি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। গ্রামের চিরোচেনা সেই স্বাস্থ্যকর নির্মল রূপ হারিয়ে যাচ্ছে। বসতি জমি, মাঠঘাট বন-বাগান প্রভৃতি জমির শ্রেণি হয়ে যাচ্ছে পরিবর্তন। যা আইনত অপরাধ।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্নিদ্ধা দাসের মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, ৩ মার্চ পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়েছে কিনা এব্যাপারে আমার জানা নেই। সংবাদ প্রকাশের কপি থাকলে পাঠান। যারা অবৈধভাবে পুকুর খনন করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি আশ্বাস দেন। সাংবাদিককে হুমকি দেওয়ার ব্যাপারে তিনি থানায় জিডি করবারও পরামর্শ দেন।

চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শারমিন আক্তারের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, আমি আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলবো।

 

 

০ কমেন্ট

রিলেটেড পোস্ট

মতামত দিন