Home » যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীর ওপর নির্যাতন, স্বামী ও তার শ্বশুর পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা

যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীর ওপর নির্যাতন, স্বামী ও তার শ্বশুর পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা

কর্তৃক আবুল কাসেম অনুরাগী
সূর্যোদয় প্রতিবেদক 21 ভিউ
Print Friendly, PDF & Email

 

 

মেহেরপুর প্রতিনিধি:

মেহেরপুরের গাংনীতে যৌতুকের দাবিতে আম্বিয়া খাতুনকে (৩০) অমানুষিক নির্যাতন ও পেটানোর অভিযোগে মেহেরপুরের বিজ্ঞ আদালতে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধে পারিবারিক অধ্যাদেশ, যৌতুক নিরোধ আইন ও নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে পৃথক পৃথক মামলা দায়ের করেন। নির্যাতনের শিকার হয়ে আম্বিয়া খাতুন বাদী হয়ে মামলাগুলো করেছেন। আম্বিয়া খাতুন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার শালদহ গ্রামের বিলপাড়ার মৃত খলিলুর রহমানের মেয়ে। অভিযুক্তরা হলেন- তার স্বামী নাজমুল হক, শাশুড়ি নাছিমা বেগম, শ্বশুর জহুরুল হক ও ননদ নাজমা খাতুন। তারা মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামের উত্তর পাড়ার বাসিন্দা।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, নাজমুল হকের সাথে চার বছর আগে আম্বিয়া খাতুনের বিয়ে হয়। তাদের পরিবারে একটি পুত্র সন্তান রয়েছে যার নাম ইছা আহমেদ। জন্মের পর থেকেই ছেলেটি হৃদজনিত রোগে ভুগছে। তার চিকিৎসার জন্যেও আমার ভাইয়েরা অনেক টাকা পয়সা খরচ করছে।  বিয়ের কয়েক মাস পর থেকে তার স্বামী নাজমুল হক, মাতা-পিতা ও বোনের কুপরামর্শে যৌতুক চেয়ে স্ত্রীর ওপর অত্যাচার নির্যাতন করতেন। আম্বিয়া খাতুন তার ভাইদেরকে অনুরোধ করে প্রায় এক লক্ষ বিশ হাজার টাকা মূল্যের ঘর সংসারের জিনিসপত্র শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে যায়। তার কিছুদিন পর বিদেশ যাওয়ার অজুহাতে আবারো পাঁচ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করে স্বামী নাজমুল হক। তার ভাইয়েরা বোন ও সন্তানের ভবিষ্যৎ বিবেচনা করে আবারো পাঁচ লক্ষ টাকা তুলে দেয় ভগ্নিপতি নাজমুল হকের হাতে। কিছুদিন যেতে না যেতেই আবারো যৌতুকের দাবিতে শুরু হয় নির্যাতন। নির্যাতন সইতে না পেরে প্রায় দুই বছর আগে তার পিতার বাড়িতে চলে আসে আম্বিয়া খাতুন। পিতার বাড়িতে অবস্থান করলেও তার স্বামী ও শ্বশুর পরিবারের লোকজন আম্বিয়া খাতুনের কোন খোঁজখবর নেয় না। এমনকি জন্মের পর থেকেই ইছা নামের ছেলেটি হৃদরোজনিত রোগে ভুগছে, তার চিকিৎসার জন্যেও নাজমুল হক বা তার পরিবার কোন টাকা পয়সা দেয় না। আম্বিয়া খাতুনের ভাইয়েরা অনেক টাকা পরসা খরচ করে তার চিকিৎসা করায়।  ভুক্তভোগী আম্বিয়া খাতুন বলেন, যৌতুকের জন্য আমার স্বামীসহ পরিবারের লোকজন আমাকে প্রায়সময়ই নির্যাতন করতেন। নির্যাতনের এক পর্যায়ে আমি হাসপাতালেও চিকিৎসা নিয়েছি।

এ বিষয়ে গাংনী থানায় অভিযোগ করতে গেলে আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন পুলিশ।  সেই মোতাবেক  ২২/০৫/২০২৩ ও ২৩/১০/২০২৩ ইং তারিখে মেহেরপুরের আদালতে পৃথক পৃথক মামলা করা হয়েছে। একটি মামলায় স্বামী নাজমুল হক তার ভুল স্বীকার করে বিচারকের নিকট উভয়ে সংসার করবে মর্মে সম্মতি জানায়। কিন্তু  আমাকে বাড়ি নিয়ে‌ মামলা তুলে নেয়ার জন্য পুনরায় নির্যাতন করে। সংবাদ পেয়ে ভাই আমাকে পিতার বাড়িতে নিয়ে আসে। পিতার বাড়িতে অসুস্থ সন্তানকে নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। আমি এর জন্য বিচার প্রার্থী। এ বিষয়ে আম্বিয়া খাতুনের স্বামী নাজমুল হক জানান, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। তার ভাই এসে আমার বাড়ি থেকে বেড়ানোর নাম করে আমার স্ত্রীকে নিয়ে গেছে। তারপর আমি একাধিকবার ফোন ও এসএমএস দিয়ে কোন উত্তর পাই নাই। আমার বিরুদ্ধে দায়ের কথা মামলাগুলো তুলে নেওয়ার কথা থাকলেও তা না করে আমাকে দেখে নেওয়ার ভয় দেখায় তার ভাই। আমিও আগামী ডেটে আদালতে বিষয়টি জানাবো।

 

 

 

০ কমেন্ট

রিলেটেড পোস্ট

মতামত দিন