চুয়াডাঙ্গার সদর উপজেলার দীননাথপুরে অবস্থিত জামেয়াতুল উলুমিল ইসলামিয়া কওমিয়া মাদরাসায় দুই শিক্ষার্থীকে বেধড়ক পেটানোর ঘটনায় পুলিশ শিক্ষক ইব্রাহিমকে গ্রেপ্তার করেছে।
শিশু আইনে বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) ঘটনার শিকার শিক্ষার্থী মিরাজের বাবা মিলন আলী সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এর পরই পুলিশ রাতের মধ্যেই শিক্ষককে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি খালেদুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আজ দুপুরে শিক্ষককে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করার প্রস্তুতি চলছে।
ঘটনার শিকার দুই শিক্ষার্থী হলেন মাখালডাঙ্গা ইউনিয়নের কুকিয়া চাঁদপুর গ্রামের মিরাজ (১২) ও বজলুর রহমানের ছেলে রাব্বি (১৩)। আহতদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসক ডা. মেহেবুবা মুস্তারী মৌ জানান, “আহত দুই শিক্ষার্থী মারাত্মকভাবে জখম হয়েছে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর দুজনকে সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি রাখা হয়েছে।”
ভুক্তভোগী মিরাজ ঘটনার বর্ণনায় জানান, “আমরা চারজন মাদরাসার মসজিদে ঘুমাচ্ছিলাম। হুজুর ইব্রাহিমের ভাগ্নে হুজাইফার গায়ে ঘুমের ঘোরে পা লেগে যায়। এ দেখেই হুজুর লাঠি দিয়ে মারতে শুরু করেন। পরে পাশের কক্ষে নিয়ে গিয়ে মেহগনি গাছের চেলা দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়।”
অন্য আহত শিক্ষার্থী রাব্বি জানান, মারধরের সময় তিনি কারণ জিজ্ঞেস করলে আরও বেশি মারধর করা হয়। শিক্ষক হুমকি দেন, ঘটনা পরিবারকে জানালে তাদের জবাই করে ফেলার বা মাদরাসার ছাদ থেকে ফেলার মতো ভয়ঙ্কর সতর্কবাণী দেয়া হয়।
আহত মিরাজের মা বলেন, “আমার ছেলে মারাত্মকভাবে আহত হয়ে বাড়ি ফিরেছে। অন্যায় হলে বলতে পারতেন, কিন্তু এভাবে মারধর করা মানবিক নয়। আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।” একই সঙ্গে রাব্বির বাবা বজলুর রহমান বলেন, “আমার ছেলে ও তার সহপাঠীকে যেভাবে পেটানো হয়েছে, তা সহ্যযোগ্য নয়। আমরা ঘটনার পূর্ণ বিচার চাই।”
উল্লেখ্য, মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষক ইব্রাহিমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা কোনো মন্তব্য করেননি।