Home » সরকারের বেঁধে দেয়া দামে মিলছে না বেশীরভাগ পন্য, জরিমানা করলেও অপ্রতিরোধ্য ব্যবসায়ীরা।

সরকারের বেঁধে দেয়া দামে মিলছে না বেশীরভাগ পন্য, জরিমানা করলেও অপ্রতিরোধ্য ব্যবসায়ীরা।

কর্তৃক আবুল কাসেম অনুরাগী
সূর্যোদয় প্রতিবেদক 67 ভিউ
Print Friendly, PDF & Email

 

আলমডাঙ্গা প্রতিনিধিঃ

রমজান মাস এলেই মূল্যবৃদ্ধির প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠে অসাধু ব্যবসায়ীরা। এবার রমজানে নিত্যপণ্যের দাম সরকার বেঁধে দিলেও কিছুতেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না ব্যবসায়ীদের। সরবরাহ কম, ভ্যাট বেশি, ডলার সংকটের মতো নানা অজুহাতে পণ্যের দাম বৃদ্ধি করেই চলেছেন আলমডাঙ্গার ব্যবসায়ীরা। রমজান মাসের ২০ দিন অতিবাহিত হলেও ভ্রাম্যমাণ আদালত এবং ব্যবসায়ীরা যেন চোর পুলিশ খেলায় লিপ্ত হচ্ছে।ইতিমধ্যে রমজান মাসে ভোক্তা অধিকার এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার ৪ দিন অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা আদায় করলেও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট স্থান ত্যাগ করার সাথে সাথে পাল্টে যাচ্ছে বাজারের চিত্র। জরিমান দেওয়ার টাকা ব্যবসায়ীরা ভোক্তার পকেট কেটে সাথে সাথে তুলে নিচ্ছে।সাধারন মানুষের মনে প্রশ্ন জরিমানা করে লাভ কি হচ্ছে ? অনেকেই আবার বলছে ধুয়ার থেকে আধুয়া ভালো, ধুতে ধুতে সবই গেল। অন্যদিকে কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতার লাইন যেন বর্তমান প্রেক্ষাপটে বার বার মনে পড়ে যাচ্ছে। তিনি লিখেছিলেন, ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়, পূর্ণিমা চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি’— ফলস্বরূপ প্রয়োজনীয় খাবার সামনে থাকলেও পকেটের দিকে তাকিয়ে শুধু দেখে যেতে হচ্ছে বাজারের সারিবদ্ধ খাবারের আইটেম। আজকের দিনে দেশের বহুমুখী উন্নয়ন হলেও এ দেশের বহুসংখ্যক মানুষই অপর্যাপ্ত আয়ের অন্তর্ভুক্ত। বর্তমানের বাজারে দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত বৃদ্ধিতে নাকানিচুবানি খেতে হচ্ছে এই সব নিম্ন আয়ের মানুষের। সর্বশেষ গত ১০ মার্চ আরেক দফা বাড়লো তেল ও চিনির দাম। আর খেজুর শোভা পাচ্ছে দোকানের সাজানো ডালায়।বাজারে যে ভয়াবহ অস্থিতিশীলতা,এ নিয়ে আতঙ্কিত সাধারন মানুষ। বর্তমানে প্রয়োজনীয় দ্রব্যের যে লাগামহীন চড়া মূল্য, তা যেন গেড়ে বসেছে সাধারণ মানুষের মস্তিষ্কের উপর। কারণ হিসেবে বলা যায়, নিম্নআয়ের মানুষ যা আয় করছে, তার পুরোটাই জীবনধারণের জন্য খাদ্যদ্রব্য ক্রয় করতেই শেষ হয়ে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা ইত্যাদির জন্য ব্যয় করার মতো অর্থ তাদের হাতে থাকছে না। ঘুরতে ঘুরতে এমনই একটি ঘটনা ঘটে গেল আসমানখালী বাজারে, আবছার নামের এক পিতা তার সন্তানের জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল সিরাপ কিনতে এসেছে যার মূল্য ৩৫ টাকা অথচ খুব কষ্টে ২০ টাকা হাতে নিয়ে এসেছে সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে। বর্তমানে যে শুধুমাত্র খাদ্যদ্রব্যের দাম আকাশছোঁয়া এ রকমটা নয়। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য মৌলিক চাহিদার কয়েকটি ক্ষেত্রেই এখন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে দেশের সাধারণ মানুষকে। সিন্ডিকেটের কারনে বাজারের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস বৃদ্ধির ফলে সুযোগ নিচ্ছে একটি কুচক্রী ব্যবসায়ী মহল। প্রচারণা দিচ্ছে খেজুরের কেজি প্রতি সরকার ২০০ টাকা ভ্যাট আরোপ করেছে যার ফলে সরকারের প্রতি সাধারণ মানুষের বিরুপ মন্তব্য আসতে শুরু করেছে। এদিকে বাজারে প্রচুর সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও হঠাৎ করে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রয় হচ্ছে গরুর মাংস, বয়লার মুরগি ও খেজুর। আলমডাঙ্গা বাজার ঘুরে দেখা গেছে ব্যবসায়ীরা তাদের মন মতো চলছে এবং অনেক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট মাধ্যমে গুদামজাত করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে মানুষের দুর্ভোগ বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে কিছুটা স্বস্তির খবর ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির ফলে অনেকটায় কমে এসেছে পেঁয়াজের দাম এছাড়াও ডিমের বাজার স্থিতিশীল আছে । এমনকি পেঁয়াজের মতো পচনশীল দ্রব্য গুদামজাত করায় টনকে টন পেঁয়াজ পচিয়ে নদীতে ফেলে দেয়ার মতো দৃশ্যও বাংলাদেশে আমাদের বিভিন্ন মিডিয়ায় দেখতে হয়েছে। মানুষ কতটা অমানবিক, অর্থলোভী, পিশাচ হলে এ ধরনের জঘন্য কাজ করতে পারে। কথায় আছে, একটা ফুল বাগান নষ্ট করার জন্য একটি হুতুম পেঁচায় যথেষ্ট, কিন্তু হুতুম বসে গেছে প্রত্যেক ডালে ডালে, ফুলবাগানের অবস্থা কি হবে আল্লাহ্ ভালো জানে।যতক্ষণ না প্রসাশন কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে ততোক্ষণ এর সুফল পাচ্ছে না সাধারন মানুষ। যেসব পরিবারে মাত্র একজন উপার্জনক্ষম ব্যক্তি আছে, সে ব্যক্তির পক্ষে আদৌ কি সম্ভব নিত্যদিনের এই পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকে থাকা? এই অবস্থা চলমান থাকলে দেশের সাধারণ মানুষ হতাশ আর অসহায়ত্বের কিনারায় ডুবে মরবে এছাড়াও মানসিকভাবেও নির্যাতিত হচ্ছে প্রতিদিন। যেসব চাকরিজীবী সৎভাবে চাকরিজীবন কাটিয়েছেন, তাদের অবস্থা বর্তমানে শোচনীয়। চাকরি জীবনের শেষ সম্বল সঞ্চয় পেনশন বা গ্র্যাচুইটির টাকা দিয়ে তারা তাদের সংসার-জীবনযাত্রা কষ্ট করে চললেও, শ্রমিক, কৃষক, এদের বৃদ্ধ বয়সে ঔষুধ তো দুরের কথা খাবারই ঠিকমতো জোটছে না।

 

 

০ কমেন্ট

রিলেটেড পোস্ট

মতামত দিন