উপজেলা প্রতিনিধি
দৌলতপুর
গেল কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির ক্ষতি আর আর দিন দশেক বৃষ্টিস্নাত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে মাথায় হাত কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের কৃষকদের। নীচু এলাকার ফসলী জমিতে হাঁটু-কোমর পানি এবং উঁচু এলাকার ফসলী জমিতেও জমে আছে পানি। এমন অতিবৃষ্টিতে নষ্ট হতে বসেছে প্রায় ১শ’ হেক্টর জমির ফসল। হুমকিতে উপজেলাটির অন্তত ৩২ হাজার হেক্টর কৃষি জমির ফসল।
বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত জনজীবনে কৃষক তাঁর কৃষি কাজ চালিয়ে গেলেও সেপ্টেম্বরের ১৪ তারিখ থেকে চলতে থাকা বৃষ্টিতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষি জমিতে কাঁচা মরিচ, বেগুন, কলা, পটোল, করলা, ঢেড়শ ও শীতের আগাম সবজির ক্ষেতে পানি জমে যাওয়ায় ফলন বিপর্যয়সহ ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। গাছের গোড়ায় বৃষ্টির পানি জমে থেকে ফসলের গাছ নষ্ট হয়ে যাওয়ার ব্যাপক সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন মৌসুমী ফসলের জন্য ক্ষেত প্রস্তুত করা সম্ভব হচ্ছে না।
হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের কৃষক ইস্তুল আলী বলেন, আমি এক বিঘা জমিতে বেগুনের চারা রোপন করেছি দিন পনের হলো, এখন বৃষ্টির পানি জমিতে জমে গেছে। চারাগুলোর অধিকাংশ নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা।
মথুরাপুর ইউনিয়নের মরিচ চাষি রমজান হোসেন বলেন, মাটিতে পানি জমে আছে একারণে মরিচের গাছে পর্যাপ্ত মরিচ ধরে থাকলেও গাছের গোড়ায় ক্ষতি হবে ভয়ে আমরা মরিচ তুলতে পারছি না। মরিচ গাছ ভেঙে আর পানি জমে পঁচে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছি আমরা মরিচ চাষীরা।
সারাবছর সবজি চাষী শরীফুল ইসলাম জানান, ঝিঙা, শিম, কচু, ঢেড়স, চিচিঙ্গা এধরনের ফসলের গাছে-লতায় পচন ধরার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। কিছু কিছু ফসল ইতোমধ্যেই নষ্ট হওয়া শুরু হয়েছে।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের বিভিন্ন এলাকায় ৫ হেক্টর কলা, ১৫ হেক্টর বিভিন্ন সবজি, ২৫ হেক্টর মাস কলাই, ১০ হেক্টর তুলা এবং ২৫ হেক্টর মরিচের জমিতে পানি জমে থেকে ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে দৌলতপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূরুল ইসলাম জানান, বিরামহীন বৃষ্টি চলতে থাকলে ধান ও অন্যান্য চাষাবাদে আরও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এই মুহূর্তে জমি থেকে যত দ্রুত সম্ভব পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা জরুরি। মাঠপর্যায়ে দাপ্তরিক ভাবে সকল ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের খোঁজ নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।