মেহেরপুর জেলার গাংনীতে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী চিৎলা ভিত্তি পাটবীজ খামার দিনেদিনে ধ্বংসের পথে চলে যাচ্ছে। এজন্য খামারের যুগ্ম পরিচালক (জেডি)’র নানারকম অব্যবস্থাপনা, উদাসিনতা, অদক্ষতা, অনিয়ম ও দূর্নীতিকে দ্বায়ি করছেন এলাকার সচেতন মহল। জেডি’র অব্যবস্থাপনায় আবারও ৩০ একর জমির ধানের চারা পুড়ে গেছে। যাতে সরকারের ক্ষতি হবে প্রায় কোটি টাকা।
সরজমিন পরিদর্শন করে জানা যায়— চিৎলা বিএডিসির যুগ্ম পরিচালক মোরশেদুল ইসলামের একান্ত কাছের লোক বা ব্যক্তিগত সহকারী নাজিমুদ্দিনের দেওয়া নিম্নমানের কীটনাশকে পুড়ে গেছে ধান গাছ। এতে সরকারের ক্ষতি হবে প্রায় কোটি টাকা।
চলতি বছর মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার চিৎলা ভিত্তি পাট বীজ খামারে ১২০ একর জমিতে আউশ ধানের চারা রোপন করা হয়। জমিতে আগাছা বৃদ্ধি পাওয়ায় চিৎলা বিএডিসি ফার্মের যুগ্ম পরিচালক মোরশেদুল ইসলামের একান্ত কাছের লোক ব্যক্তিগত সহকারী বা অপকর্মের হাতিয়ার নাজিম উদ্দিন বালতিতে ভরে কীটনাশক প্রয়োগের জন্য লেবারকে দেন। কীটনাশক প্রয়োগের কয়েক দিনের মধ্যেই ধানের চারা গাছ গুলো মরতে শুরু করে। তবে কি ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করা হয়েছে এ ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি কর্মরত লেবারদের। অভিযোগ রয়েছে ভেজাল ও নিম্নমানের কীটনাশক এবং সার, যুগ্ম পরিচালক মোরশেদুল ইসলাম নাজিম উদ্দিনের মাধ্যমে অল্পদামে চুয়াডাঙ্গা থেকে নিয়ে আসে। ভেজাল কীটনাশক ও সারের ডিলারের সাথেও জেডি’র আছে বিশেষ সম্পর্ক ও লেনদেন। আর এই সমস্ত ভেজাল ও নিম্নমানের সার আর কীটনাশক ব্যবহার করায় দিন দিন কমেছে যাচ্ছে খামারের জমির উর্বরতা শক্তি ও ফসলের ফলন। পাশাপাশি জেডির অনিয়মের ও স্বেচ্ছাচারিতার কারনে ফার্মের উপ-পরিচালকগণ কোন প্রকার পরামর্শ বা সহযোগিতা করেন না বলে অভিযোগ কৃষকদের।
ফার্মে কর্মরত লেবাররা বলছেন, ধানের জমিতে অনেক আগাছা জন্মে. তাই নাজিম উদ্দিন তাদেরকে কীটনাশক প্রয়োগ করতে বলেন। সেই কীটনাশক ব্যবহার করার ফলে ৩০ একর জমির ধান গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। এতে ফার্মের কোটি টাকার ধান নষ্ট হয়েছে। কীটনাশকের বোতলের আলামত নষ্ট করার জন্য ধান গাছ মারা যাওয়ার একদিনের মাথায় তড়িঘড়ি করে নাজিম উদ্দিন বোতলগুলো পুড়িয়ে ফেলেন। কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, নাজিম উদ্দিনের অনুমতি ব্যতীত কোনো কাজ করতে পারেন না উপসহকারী কর্মকর্তারা। কিন্তু আসলে কে এই নাজিম উদ্দীন? তিনি ফার্মের বৈধ কোনো কর্মচারি কিনা তাও কেউ জানে না। নাজিমুদ্দিন এখানকার যুগ্ম পরিচালকের মত ভাব নিয়ে কাজ কাম করেন, এ ক্ষমতা দিয়ে রেখেছেন যুগ্ম পরিচালক স্যার মোরশেদুল ইসলাম বলে জানান ফার্মের লেবাররা।
সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে অভিযুক্ত নাজিম উদ্দিন ফার্ম ছেড়ে পালিয়ে যান।
পরে সাংবাদিকরা কীটনাশকের বোতল সংগ্রহ করে গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেনের কাছে নিয়ে আসলে তিনি বলেন, যে কীটনাশকগুলো ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলো আগাছা নাশক। এই কীটনাশক বেশি ব্যবহার করলে ধান গাছের গোড়ায় ধীরে ধীরে পচন ধরে এমনটাই জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি চিৎলা ফার্মের যুগ্ম পরিচালক মোর্শেদুল ইসলাম, ও উপসহকারী কর্মকর্তারা।
মেহেরপুর বিএডিসির উপ-পরিচালক শামীম হায়দারকে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ফোন কেটে দেন। পরবর্তীতে আর ফোন রিসিভ করেননি।
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন(বিএডিসি) চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ এনডিসির সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
চলবে