ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে দুই শিবিরকর্মী হত্যার ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নিহতদের পরিবারের পক্ষ মামলা দুটি করা হয়। এসব মামলায় তৎকালীন পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেন ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখসহ আট পুলিশ কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে।
নিহত দুই শিবিরকর্মী হলেন কালীগঞ্জ পৌরসভাধীন বাকুলিয়া গ্রামের শামীম হোসেন (২১) ও চাপালী গ্রামের বাসিন্দা নুর ইসলামের ছেলে আবুজার গিফারী (২২)। শামীম হোসেনের বাবা রুহুল আমিন ও আবুজার গিফারীর বাবা নুর ইসলাম বাদী হয়ে ঝিনাইদহের আমলি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (কালীগঞ্জ) মামলা দুটি করেন।
দুই মামলার মধ্যে শামীম হোসেন হত্যায় ঝিনাইদহ জেলা পুলিশ সুপার আলাতাফ হোসেন চৌধুরীসহ ১২ জন এবং আবুজার গিফারী হত্যায় ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন কালীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নীরব হোসেন, এসআই শরাফুল আলম, এসআই ইমরান হোসেন, এসআই গাফ্ফার হোসেন, এসআই নাসির হোসেন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শিবলী নোমানী, সাবেক মেয়র আশরাফুল আলম, সাবেক মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান বিজু, ভারতে খুনের স্বীকার ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের ব্যক্তিগত সহকারী আব্দুর রউফ, রায়গ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলী হোসেন অপু, রাখালগাছী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলাম মন্টু ও বারোবাজার ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ।
শামীম হোসেন হত্যা মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৬ সালের ২৪ মার্চ বিকেল ৫টার দিকে সরকারি মাহতাব উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের পূর্ব পাশের গেটের সামনে থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চারজন সদস্য সাদা পোশাকে এসে দুটি মোটরসাইকেলে করে চোখ বেঁধে শামীম হোসেনকে তুলে নিয়ে যান। এর ২০ দিন পর ১৩ এপ্রিল যশোর জেলার হৈবতপুর ইউনিয়নের লাউখালী বিরাম পুকুর থেকে তার গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
আবুজার গিফারী হত্যার মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৬ সালের ১৮ মার্চ দুপুর ২টার দিকে আবুজার গিফারীকে তার বাড়ির সামনে থেকে দুটি মোটরসাইকেলযোগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে তুলে নিয়ে যায়। এরপর ১৩ এপ্রিল যশোর জেলার হৈবতপুর ইউনিয়নের লাউখালী বিরাম পুকুর থেকে তার গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার হয়।
পরিকল্পিতভাবে কথিত বন্ধুকযুদ্ধের নামে শামীম হোসেন ও আবুজার গিফারীকে নির্যাতন ও গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। এসব অভিযোগ এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার জন্য কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ আবু আজিফ বলেন, আদালতের কপি পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।