মেহেরপুরের গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজে ৯ জনের কাছ থেকে ভূয়া নিয়োগ দিয়ে কোটি টাকা ঘুষ নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। টাকা আদায়ে বুধবার প্রধান শিক্ষক আফজাল হোসেনের বাড়ির সামনে অবস্থান নেয় ভুক্তভোগী ওই শিক্ষকরা।
অভিযোগে জানা গেছে, ২০২২ সালে গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের কলেজ শাখা ও বিদ্যালয়ের দিখা শাখা এমপিও ভুক্ত হয়। এ এমপিও ভুক্তির মধ্যে শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে এমপিও করে দেওয়া হবে বলে প্রলোভন দেয় প্রধান শিক্ষক আফজাল হোসেন। ২০১৫ সালে ব্যাকডেটে নিয়োগের ভূয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে ৯ জন শিক্ষক দেন আফজাল হোসেন। নিয়োগে সহযোগিতা করেন আফজাল হোসেন চক্র নামের কয়েকজন। এর মধ্যে সহকারি শিক্ষক মনিরুল ইসলাম ও অনলাইন কাগজপত্র তৈরী করে সহায়তা করেন সহকারি শিক্ষক তোফাজ্জেল হোসেন তুহিন।
অভিযোগে জানা গেছে, ওই ৯ জন শিক্ষকের নিয়োগ ২০১৫ সালে দেখানো হলেও তারা মূলত ২০২২ সালে এমপিও ভুক্তির ঘোষণার পর স্কুলে আসেন। সেই থেকে অদ্যবধি অপেক্ষা করেও এমপিও ভুক্ত না হওয়ায় ওই শিক্ষকরা বুঝতে পারেন এমপিও হবে না।
অভিযোগে জানা গেছে, নিয়োগের পত্রিকার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি থেকে শুরু করে সকল কাগজপত্র ব্যাকডেটে সম্পন্ন করা হয়। নিয়োগের জন্য ৯ জনের কাছ থেকে প্রধান শিক্ষক আফজাল হোসেন ও তার চক্রের সদস্যরা গ্রহণ করেন মোট ১ কোটি ১৫ লাখ টাকা।
নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকরা নিয়োগের সকল কাগপত্র পর্যালোচনা করে দেখেন যে, সরকারি নির্দেশনা মানা হয়নি তাদের নিয়োগ কার্যক্রমে। যে সকল স্মারক নং ব্যবহার করা হয়েছে সেই স্মারক জেলা শিক্ষা অফিসে পাওয়া যায়নি। ফলে নিয়োগপ্রাপ্তদের ভূয়া নিয়োগ দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেন আফজাল হোসেন ও তার চক্রের সদস্যরা। বিষয়টি টের পেয়ে তারা টাকা ফেরতের জন্য আফজাল হোসেনের বাড়ির সামনে অবস্থান নেন বুধবার দুপুরে।
জেলা শিক্ষা অফিস ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তাদের নিয়োগ যেহেতু অবৈধ তাই তাদের এমপিও ভুক্ত হওয়ার কোন সুযোগ নেই।
এমতাবস্থায় ভুক্তভোগী শিক্ষকগণ নিরুপায় হয়ে তার বাড়ির সামনে অবস্থান নিয়ে সাংবাদিকদের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে তুলে ধরেন। যেহেতু নিয়োগ প্রক্রিয়া ভূয়া তাই তাদের দেওয়া টাকা অতি দ্রুত ফেরতের দাবি জানান তারা।
জানা যায়, ইতোমধ্যেই ওই ৯ শিক্ষক আইনের আশ্রয় নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগহ করেছেন। দুয়েক দিনের মধ্যে তারা সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানা গেছে।
এদিকে কোটি টাকা ঘুষ বাণিজ্যের বিষয়ে জানতে চেয়ে কল দিলেও অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আফজাল হোসেনের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
প্রসঙ্গত, গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফজাল হোসেনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদের অভিযোগে মামলা করেছে দুদক। মামলাটি দুদক কুষ্টিয়া সমন্বিত জেলা কার্যালয় কুষ্টিয়ার একজন কর্মকর্তা তদন্ত করছেন।