ইবি প্রতিনিধি
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) পরিচয় গোপন করে ছদ্মবেশে সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রীর প্রবেশ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপবাদ এবং চড়াও হওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইবির সহ-সমন্বয়ক মুবাশ্বির আমিনের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হবে বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইবি সমন্বয়ক এস. এম সুইট।
গত বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা হলে পরিচয় গোপন করে ছদ্মবেশে সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রী ঝুমা শেখ প্রবেশ করেন। পরে সন্দেহজনক দুটি বস্তা নিয়ে হল থেকে বেরিয়ে যান। তখন নিজেদের নিরাপত্তার দাবিতে মধ্যরাতে আন্দোলন করে হলের আবাসিক ছাত্রীরা। তবে ৫ সেপ্টেম্বর রাতের সেই আন্দোলন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লাইভ করায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটির সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে চড়াও হয়েছেন ইবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক মুবাশ্বির আমিন।
এছাড়াও গত শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ২০৬ নম্বর কক্ষের এক শিক্ষার্থীকে সিট থেকে নামিয়ে দেয়ার সময় তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে ইবি রিপোর্টার্স ইউনিটির তিন সাংবাদিকের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়ান। এসময় সাংবাদিকের স্বচ্ছতা নিয়েও বিভিন্ন প্রশ্ন তোলেন সহ-সমন্বয়ক মুবাশ্বির আমিন। কথাবার্তার একপর্যায়ে ফোন করে কয়েকজনকে ঘটনাস্থলে ডেকে নিয়ে আসেন ও সাংবাদিকদের সাথে উচ্চবাচ্য শুরু করেন।
৫ সেপ্টেম্বর রাতে শেখ হাসিনা হলের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় সাংবাদিকরা তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে কীভাবে পৌঁছেছে, সেই তথ্য সাংবাদিকদের কাছে জানতে চান। তথ্যের উৎস জানতে চেয়ে তাদের হেনস্তা করেন মুবাশ্বির।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইবি সমন্বয়ক এস. এম সুইট বলেন, এই আন্দোলনকে বেগবান করতে সাংবাদিকরা বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। সাংবাদিকদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করতে দেয়া উচিত। তিনি যে কাজ করেছেন তার দায় একান্তই তার নিজের। তিনি দোষী প্রমাণিত হলে আমরা কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক পরিষদের কাছে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করবো।
পরে রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২টার দিকে আবারও বঙ্গবন্ধু হলের ২০৬ নম্বর কক্ষের সেই শিক্ষার্থীকে হল থেকে নেমে যেতে ১০ মিনিটের আল্টিমেটাম দেয় সহ-সমন্বয়ক মুবাশ্বির আমিন।
সহ-সমন্বয়ক তানভীর মণ্ডলকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, সমন্বয়কদের মাঝে এমন কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। যেহেতু বর্তমানে হলের প্রশাসন নেই, তাই কাউকে সিটে তোলার দায়িত্ব আমাদের না। তাই সেই শিক্ষার্থীকে ২০৬ নম্বর কক্ষের সিট থেকে পুনরায় গণরুমে ফেরত যেতে বলা হয়েছে।
এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটির এক সাংবাদিক বলেন, গণমাধ্যমকর্মীরা এখন হুমকির মুখে। সাংবাদিক সাধারণের বন্ধু, সেখানে সত্য প্রকাশ এবং তথ্য সাধারণের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া আমাদের দায়িত্ব। কিন্তু এখানেও আমদের বাঁধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। সবশেষে এটাই বলতে চাই, মুক্ত সংবাদ চর্চা আমাদের অধিকার।