দক্ষিণী সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির জনপ্রিয় অভিনেত্রী কিয়ারা আদভানি মা হওয়ার পর কর্মজীবন ও মানসিক স্বাস্থ্যের ভারসাম্য নিয়ে স্পষ্ট কথা বলেছেন। বলিউড অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোনের দৈনিক আট ঘণ্টা কাজের দাবিকে সমর্থন জানিয়েছেন তিনি। অতিরিক্ত কাজের চাপ বা ‘বার্নআউট’ কোনো শিল্পেই কারও জন্য ভালো ফল বয়ে আনে না বলেও জানিয়েছেন কিয়ারা আদভানি।
অভিনেত্রীর এমন মন্তব্য এসেছে কয়েক মাস আগে ঘটে যাওয়া একটি আলোচিত ঘটনার মধ্য দিয়ে। পরিচালক সন্দীপ রেড্ডি ভাঙ্গা পরিচালিত ও প্রভাস অভিনীত সিনেমা ‘স্পিরিট’ থেকে নাকি দীপিকা পাড়ুকোনকে ‘বাদ’ দেওয়া হয়েছিল। একইসঙ্গে তিনি নাগ অশ্বিন পরিচালিত ‘কাল্কি ২৮৯৮ এডি’–এর সিকুয়েল থেকেও সরে দাঁড়ান।
অভিনেত্রী কিয়ারা আদভানি ও সিদ্ধার্থ মালহোত্রা দম্পতি গত জুলাইয়ে কন্যাসন্তান সারায়াহর মা-বাবা হয়েছেন। মা হওয়ার পর প্রথমবার দেওয়া সাক্ষাৎকারে কাজের সময় ও মানসিক সুস্থতা নিয়ে নিজের ভাবনার কথা তুলে ধরেছেন অভিনেত্রী।
মা হওয়ার অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে কিয়ারা আদভানি বলেন, মা হওয়ার পর একমুহূর্তে আমার মনে হয়েছিল, এর সঙ্গে কোনো কিছুর তুলনা হয় না। তিনি বলেন, নিজের শরীরকে সবসময় সম্মান করতে হবে। কাজের জন্য আমি অনেক কিছু করেছি। মা হওয়া জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এখন সেটাই উপভোগ করছি।
সম্প্রতি ভোগ ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ৮ ঘণ্টা কাজের অবস্থান সমর্থন জানিয়ে অভিনেত্রী বলেন, ‘বার্নআউট কোনো শিল্পেই কারও উপকারে আসে না।’ কিয়ারা বলেন, মানসিক সুস্থতার ভিত্তি গড়ে ওঠে তিনটি বিষয়ের ওপর—মর্যাদা, ভারসাম্য ও সম্মান।
ক্লান্তি ও মানসিক চাপ কাটানোর তার সবচেয়ে সহজ ও কার্যকর উপায় কী?—এমন প্রশ্নের উত্তরে হাসতে হাসতে অভিনেত্রী বলেন, ‘ঘুমের মধ্যে সারায়াহর খিলখিল হাসির শব্দ।’
কিয়ারা আদভানিকে সবশেষ দেখা গেছে ‘ওয়ার ২’ সিনেমায়, যেখানে তার সহশিল্পী ছিলেন হৃতিক রোশন ও জুনিয়র এনটিআর। আগামী দিনে তিনি অভিনয় করবেন প্যান–ইন্ডিয়ান সিনেমা ‘টক্সিক: আ ফেয়ারি টেল ফর গ্রোন–আপস’-এ। এ সিনেমায় তার সঙ্গে থাকছেন যশ ও নয়নতারা।
উল্লেখ, দীপিকা পাড়ুকোন গত বছরের সেপ্টেম্বরে মা হওয়ার পর নতুন মায়েদের জন্য চলচ্চিত্রশিল্পে আট ঘণ্টা কাজের শিফট চালুর পক্ষে সোচ্চার হয়েছিলেন। চলতি বছরের অক্টোবরে সিএনবিসি টিভি১৮–কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই বিতর্ক মন্তব্য নিয়ে মুখ খোলেন তিনি। দীপিকা বলেন, শুধু আমি একজন নারী বলেই যদি এটাকে বাড়াবাড়ি বা জোরাজুরি বলে মনে হয়, তাহলে সেটাই হোক। কিন্তু এটা কোনো গোপন বিষয় নয় যে, ভারতীয় চলচ্চিত্রশিল্পে বহু পুরুষ সুপারস্টার অনেক বছর ধরেই দিনে আট ঘণ্টা কাজ করছেন, আর সেটা কখনো খবরের শিরোনাম হয়নি।
অভিনেত্রী বলেন, আমি এখন কারও নাম নিতে চাই না এবং বিষয়টাকে আর বড় করে তুলতে চাই না। কিন্তু এটা খুবই পরিচিত ও প্রকাশ্য সত্য যে বহু পুরুষ অভিনেতা বছরের পর বছর দিনে আট ঘণ্টা কাজ করছেন। তাদের অনেকেই সোমবার থেকে শুক্রবার পর্যন্তই কাজ করেন, সপ্তাহান্তে কাজই করেন না।

