Home » তেলের বিনিময়ে পানি

ভয়াবহ খরা মোকাবিলায় তুরস্কের সঙ্গে ইরাকের নতুন চুক্তি

তেলের বিনিময়ে পানি

কর্তৃক Mahabobul Haque Polen
নিজস্ব প্রতিবেদক 37 ভিউ
Print Friendly, PDF & Email

দজলা ও ফোরাত—দুই ঐতিহাসিক নদীর দেশ ইরাক বর্তমানে শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ খরার মুখে। উজানে বাঁধ নির্মাণ, কম বৃষ্টিপাত ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে নদী দুটির পানিপ্রবাহ ভয়াবহভাবে কমে গেছে। এ সংকট মোকাবিলায় তুরস্কের সঙ্গে ‘তেলের বিনিময়ে পানি’ চুক্তিতে গেছে ইরাক। আলজাজিরার তথ্যমতে, ১৯৩৩ সালের পর এটি ইরাকের সবচেয়ে শুষ্ক সময়। পশ্চিম এশিয়া থেকে পারস্য উপসাগরে প্রবাহিত দজলা ও ফোরাত নদীর পানির স্তর প্রায় ২৭ শতাংশ কমেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উজানে তুরস্ক ও সিরিয়ায় নির্মিত বাঁধ এবং পানির প্রবাহে বিধিনিষেধ এই সংকট আরও বাড়িয়েছে। সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত অবকাঠামো, সরকারি অব্যবস্থাপনা এবং দীর্ঘদিনের দুর্নীতি পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। চার কোটি ৬০ লাখ জনসংখ্যার ইরাকে কৃষি খাতে ব্যবহৃত হয় দেশের মোট পানির ৮০ শতাংশের বেশি। গত নভেম্বরে তুরস্কের সঙ্গে কয়েকশ কোটি ডলারের ‘পানি সহযোগিতা চুক্তি’ করে ইরাক। এর আওতায় তুর্কি কোম্পানিগুলো ইরাকে পানিশোধন ও পানি সংরক্ষণ অবকাঠামো নির্মাণ করবে। এর বিনিময়ে ইরাক প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ অপরিশোধিত তেল বিক্রি করে সেই অর্থে তুর্কি কোম্পানিগুলোর পাওনা পরিশোধ করবে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি কার্যত তেলের বিনিময়ে পানির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উদ্যোগ। ইরাকি প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তোহান আল-মুফতি জানান, দজলা ও ফোরাতের পানিপ্রবাহ ধরে রাখতে এটিই প্রথম বাধ্যবাধকতামূলক পদক্ষেপ। তবে বাগদাদভিত্তিক পানিনীতি বিশেষজ্ঞ শুরোক আলাবায়াচি সতর্ক করে বলেন, ‘পানি একটি মৌলিক মানবাধিকার; একে তেলের রাজস্বের সঙ্গে পণ্য হিসেবে যুক্ত করা ঠিক নয়।’ এই সংকটে সাধারণ মানুষের জীবন বিপর্যস্ত। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, খরা ও পরিবেশগত বিপর্যয়ের কারণে এক লাখ ৬৮ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। পানির অভাবে বহু কৃষক চাষাবাদ ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন। বাবেল প্রদেশের সাবেক কৃষক আহমেদ আল-জাশআমির ভাষায়, ‘পানি না থাকায় আমাদের জীবিকাই হারিয়ে গেছে।’



রিলেটেড পোস্ট

মতামত দিন


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.