Home » মনোনয়ন সংকটে গাংনীতে বিএনপির বড় ভাঙন, অস্থিরতায় দিশেহারা কর্মীরা

মনোনয়ন সংকটে গাংনীতে বিএনপির বড় ভাঙন, অস্থিরতায় দিশেহারা কর্মীরা

কর্তৃক Mahabobul Haque Polen
নিজস্ব প্রতিবেদক 35 ভিউ
Print Friendly, PDF & Email

মেহেরপুরের গাংনীতে বিএনপি এখন তীব্র অভ্যন্তরীণ সংকটে নিমজ্জিত। দলীয় মনোনয়ন ঘোষণার পর উপজেলা বিএনপিতে সৃষ্টি হয়েছে অস্বাভাবিক টানাপোড়েন। কয়েক দিনের ব্যবধানে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, গাংনীতে বিএনপির রাজনীতি এখন ‘ধেয়ে আসা ঝড়’Ñএমন মন্তব্যই করছেন স্থানীয়রা। দলীয় কার্যালয় থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ের সভাÑসব জায়গাতেই বিরোধ, ক্ষোভ আর পাল্টাপাল্টি শক্তি প্রদর্শনের চিত্র দেখা যাচ্ছে। মনোনয়ন নিয়ে এমন উত্তেজনা সাম্প্রতিক সময়ে আর দেখা যায়নি। মনোনয়ন ঘোষণার পর বিএনপির বিভিন্ন ইউনিট জরুরি সভা ডেকে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি তোলে। শহরের কেন্দ্রস্থলে আকস্মিক মিছিল বের করেন একদল তরুণ কর্মী। তাদের স্লোগানÑ
“মেঘলা রাতে চোরাবালির মনোনয়ন চলবে না!” এতে পুরো এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। দলীয় শীর্ষ নেতারা এসবকে ‘অননুমোদিত’ ও ‘উসকানিমূলক’ বললেও মাঠের কর্মীরা তাতে কর্ণপাত করছেন না। গাংনী বিএনপিতে দীর্ঘদিন ধরে দুই বলয় সক্রিয়Ñপুরোনো নেতৃত্বের প্রভাবশালী অংশ এবং উদীয়মান তরুণদের গ্রুপ। মনোনয়ন প্রকাশের পর এই দুই বলয়ের বিরোধ প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। জাভেদ মাসুদ মিল্টন পক্ষের অভিযোগÑ মনোনয়নপ্রাপ্ত আমজাদ হোসেন কেন্দ্রের ঘনিষ্ঠ হলেও কর্মীদের কাছে ছিলেন অনুপস্থিত। অন্য দিকে আমজাদ পক্ষের দাবিÑ
কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা রুমের ভেতরেই গাংনীর রাজনীতি ভাগ করে দিয়েছেন। এই পাল্টাপাল্টি অভিযোগে পুরো উপজেলা বিএনপি এখন কার্যত দ্বিখণ্ডিত। আমজাদ হোসেনের সমর্থকদের অভিযোগÑ “চেয়ারপারসনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এমন বিক্ষোভ দলের জন্য অশুভ সংকেত।”
তাদের ভাষ্যÑজনপ্রিয় নেতাদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, যা পরিস্থিতিকে আরও ঘনীভূত করছে। অপর দিকে জাভেদ মাসুদ মিল্টন পক্ষর মতে গত ১৭ বছর নেতা কর্মীদের দুদিনে জাভাদে মাসুদ মিল্টন ছাড়া অন্যকে পাওয়া যায়নি। কেন্দ্র যে মনোনয়ন দিয়েছে তা দলীয় তৃনমুলের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা। কয়েকশ নেতাকর্মী সড়কে জড়ো হলেই পুলিশ দ্রুত অবস্থান নেয়। কোনো ধরনের অবরোধ বা সহিংসতা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে। পুলিশ বলছেÑ “অনুমতি ছাড়া কর্মসূচি হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” অপরদিকে বিএনপি নেতা-কর্মীদের অভিযোগÑ “গণতান্ত্রিক প্রতিবাদ ঠেকাতে পুলিশ মাঠে নামছে।” মনোনয়ন সংকটে সাধারণ কর্মীদের মধ্যে হতাশা ও বিভ্রান্তি বেড়েছে। তাদের প্রশ্নÑ “নেতৃত্বই যখন দুই ভাগে, আন্দোলন কোন পথে যাবে?” কর্মীদের অভিযোগ, মনোনীত প্রার্থী মাঠে ততটা সক্রিয় ছিলেন না; অন্যদিকে বঞ্চিত প্রার্থী জাভেদ মাসুদ ছিলেন কর্মীবান্ধব। ফলে সমর্থন এখন দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে তরুণ কর্মীদের মধ্যে হতাশা বেশি। স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতেÑ পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে না আনলে গাংনীতে বিএনপি চরম ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”
তাদের ধারণাÑদলীয় ভাঙন দীর্ঘায়িত হলে নির্বাচনী মাঠেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। কেন্দ্রীয় সূত্র জানিয়েছেÑপরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে শিগগিরই বিশেষ দল পাঠানো হতে পারে। গাংনীতে বিএনপির রাজনীতিতে এখন একটাই শব্দÑঅস্থিরতা। মনোনয়ন নিয়ে জন্ম নেওয়া এ সংকট দ্রুত সমাধান না হলে দলটি বড় রাজনৈতিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে পারেÑযার প্রভাব পড়তে পারে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনেও

রিলেটেড পোস্ট

মতামত দিন


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.