Home » মেহেরপুরে ৩০৮ প্রাথমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতি

মেহেরপুরে ৩০৮ প্রাথমিক শিক্ষকদের কর্মবিরতি

কর্তৃক Mahabobul Haque Polen
নিজস্ব প্রতিবেদক 441 ভিউ
Print Friendly, PDF & Email

তিন দফা দাবি আদায় ও শিক্ষকদের ওপর পুলিশি নির্যাতনের প্রতিবাদে মেহেরপুরের ৩০৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আজও সহকারী শিক্ষকরা কর্মবিরতি পালন করছেন। এতে চরম ঝুকিতে পড়েছে পরীক্ষার মুখে থাকা প্রায় ৭০ হাজার শিক্ষার্থীর ভবিষৎ। আগামী ২২ ডিসেম্বর প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা ও বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও, ক্লাস বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতি এখন বড় ধরনের ঝুঁকিতে।
মেহেরপুর জেলার মোট ৩০৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ৭০ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। সহকারী শিক্ষকদের চলমান কর্মবিরতির কারণে শিক্ষা কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে এসেছে। বিশেষ করে ২২ ডিসেম্বরের বৃত্তি ও বার্ষিক পরীক্ষাকে ঘিরে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে তৈরি হয়েছে চরম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা। প্রতিদিন স্কুলে গিয়ে ক্লাস না পেয়ে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরছে শিক্ষার্থীরা। চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী আয়েশা খাতুন বলেন, “পরীক্ষার এত কাছাকাছি সময়ে টানা ক্লাস বন্ধ থাকায় আমাদের পড়াশোনায় বড় ক্ষতি হচ্ছে। যেসব অধ্যায় শেষ হওয়ার কথা ছিল, সেগুলো এখনো অসম্পূর্ণ। শিক্ষকরা না পড়ানোয় আমরা পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারছি না।” অভিভাবক মারুফ রহমান বলেন, “এই অবস্থায় পরীক্ষার ফলাফলও নেতিবাচক হবে। স্কুলের নিয়মিত ক্লাসের মতো মানসম্মত পড়াশোনা বাড়িতে করানো সম্ভব নয়। অনেক কর্মজীবী অভিভাবক তো সন্তানের পড়াশোনার দেখাশোনার সময়ই পান না। তাই এই কর্মবিরতি চলতে থাকলে শিশুদের ভবিষ্যৎ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”
সহকারী শিক্ষক শংকর কুমার জানান, “ঢাকার কেন্দ্রীয় তিন দফা দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে আমরা মাঠে নেমেছি। পুলিশি নির্যাতনের ঘটনায় দেশের বিভিন্ন স্থানে বহু শিক্ষক আহত হয়েছেন, যা আন্দোলন দমন করার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে।” বামনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফরোজা তুলি বলেন, “দশম গ্রেডের দাবিতে শিক্ষকরা আন্দোলনে নেমেছেন। প্রশাসনের গুলিতে অনেক সহকারী শিক্ষক আহত হয়েছেন। ফলে তারা ক্লাসে ফিরছেন না। শিক্ষার্থীরা স্কুলে এলেও শিক্ষকরা ক্লাস না নেওয়ায় তারা খেলা করে চলে যাচ্ছে।” গাংনী সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ একাধিক সহকারী শিক্ষক বলেন,
ঢাকার কেন্দ্রীয় তিন দফা দাবিতে তারা একাত্ম হয়ে মাঠে নেমেছেন। তারা অভিযোগ করেন, পুলিশি নির্যাতনে বিভিন্ন শিক্ষক আহত হয়েছে, যা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আন্দোলন ভাঙার প্রচেষ্টা। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তারা। গাংনী সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক পারভেজ সাজ্জাদ রাজা, বলেন, “দশম গ্রেডের দাবিতে শিক্ষরা আন্দোলনের ঢাক দিয়েছে। সেই আন্দোলনে প্রশাসনের গুলি বর্ষনে অনেক সহকারি শিক্ষক আহত সেই কারণে শিক্ষকরা আন্দলনে আছে। আমি তাদের কাজে যোগদেবার জন্য বলেছি।” জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সুকুমার মিত্র বলেন, “আমার জানা মতে সব স্কুল খোলা আছে এবং পাঠদান চলমান। তবে কোথাও ক্লাস বন্ধ থাকলে শিক্ষার্থীরা নিঃসন্দেহে ক্ষতির মুখে পড়বে। আমি বর্তমানে ছুটিতে আছি, কর্মকর্তাদের পাঠিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখব।”

রিলেটেড পোস্ট

মতামত দিন


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.