ভারতে অবস্থানরত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুসারীদের জামিন দেওয়া বর্তমান বাস্তবতায় জামিনের নীতিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, যেসব ব্যক্তি জামিনে মুক্তি পেয়ে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারীদের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে, তাদের জামিন দেওয়া বিচারিক বিবেচনার গুরুতর বিষয়।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন আইন উপদেষ্টা।
ড. আসিফ নজরুল জানান, প্রধান বিচারপতির শেষ কর্মদিবসে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতেই তিনি সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রত্যাশা পূরণে বিচার বিভাগীয় সংস্কারে প্রধান বিচারপতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন এবং আইন মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন উদ্যোগে তার সহযোগিতা ছিল।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, সম্প্রতি হাইকোর্টের কিছু বেঞ্চ থেকে অস্বাভাবিক হারে জামিন দেওয়ার বিষয়ে তিনি আগেও প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। চার ঘণ্টায় শত শত জামিন দেওয়ার মতো ঘটনায় বিচার বিভাগের অভিভাবক হিসেবে প্রধান বিচারপতি সংশ্লিষ্ট বেঞ্চগুলোর সঙ্গে কথা বলেছেন বলেও জানান তিনি। এতে কিছুটা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও উদ্বেগ পুরোপুরি কাটেনি বলে মন্তব্য করেন আসিফ নজরুল।
তিনি বলেন, “যেসব ব্যক্তি জামিনে মুক্তি পেয়ে সহিংসতা বা হত্যাকাণ্ডে জড়াতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে, তাদের জামিন দেওয়া হলে এর দায়ভার বিচারিকভাবে বিবেচনা করা জরুরি।” তবে একই সঙ্গে তিনি স্পষ্ট করেন, আইনগতভাবে যেসব ক্ষেত্রে জামিন প্রাপ্য, সেখানে বিচারকদের স্বাধীনভাবে জামিন দেওয়ার অধিকার রয়েছে।
নতুন প্রধান বিচারপতি দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম বৈঠকেই এ বিষয়ে আলোচনা করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন আইন উপদেষ্টা। পাশাপাশি তিনি বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ফলে দেশ একজন যোগ্য ও সৎ প্রধান বিচারপতি পেয়েছে, যা বিচার বিভাগের জন্য একটি বড় অর্জন।

