আইনি অনিশ্চয়তা ও সাংস্কৃতিক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও ইরানের সড়কে মোটরবাইক চালানো নারী রাইডারদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। রঙিন হেলমেট পরা নারীদের মোটরবাইকে চলাচলের দৃশ্য দেশটির সমাজে ধীরে ধীরে পরিবর্তিত মনোভাবের ইঙ্গিত দিলেও বাস্তবতায় তাদের পথচলা এখনও নানা বাধায় ঘেরা। ইরানের আইন নারীদের মোটরসাইকেল চালানো স্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ না করলেও বাস্তবে কোনো নারীকে এখনো আনুষ্ঠানিক মোটরসাইকেল লাইসেন্স দেওয়া হয়নি। ফলে দুর্ঘটনা বা তল্লাশির সময় নারী রাইডারদের আইনি ঝুঁকিতে পড়তে হয়। সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, সরাসরি নিষেধাজ্ঞা নেই; তবে উগ্ররক্ষণশীল গোষ্ঠী ধর্মীয় পোশাকবিধি ও সামাজিক রীতিনীতির কথা তুলে ধরে নারীদের এই চলাচলের বিরোধিতা করে আসছে। তবে নারীদের ভাষ্য অনুযায়ী, পরিস্থিতি আগের তুলনায় কিছুটা সহজ হয়েছে। পুলিশের আচরণেও আগের মতো কঠোরতা নেই বলে তারা মনে করছেন। বিশেষ করে ২০২২ সালে হিজাব না পরার অভিযোগে মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর সামাজিক বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে ইরানি নারীদের প্রতিবাদ ও স্বতন্ত্রতা প্রকাশের প্রবণতা জোরালো হয়। সেই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় মোটরবাইক চালানোও অনেক নারীর কাছে আত্মপ্রকাশ ও স্বাধীনতার প্রতীক হয়ে উঠেছে। ইরানের মোটরসাইক্লিং ও অটোমোবাইল ফেডারেশনের দীর্ঘদিনের সদস্য, ৪৯ বছর বয়সী মেরিয়াম ঘেলিচ একসময় সমালোচনা এড়াতে তেহরানের ফাঁকা রাস্তায় রাতে মোটরবাইক চালাতেন। বর্তমানে তিনি শত শত নারীকে মোটরবাইক চালানোর প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। ঘেলিচ বলেন, “একসময় মোটরসাইক্লিংকে শুধু পুরুষদের বিষয় বলে মনে করা হতো। এখন ধীরে ধীরে তা সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য হচ্ছে, আর তাই আরও বেশি নারী এই পথে এগিয়ে আসছেন।”
পূর্ববর্তী পোস্ট

