মেহেরপুর শহরের পরিচ্ছন্নতা রক্ষায় পৌরসভা ব্যর্থতার অভিযোগে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে স্থানীয় নাগরিকরা। শহরের অলিগলি থেকে শুরু করে প্রধান সড়ক পর্যন্ত ময়লা-আবর্জনার স্তূপ গড়ে উঠছে। এই অবস্থায় সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ী এবং শিক্ষার্থীরা দৈনন্দিন জীবনে মারাত্মক সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। শহরের বিভিন্ন এলাকায় পর্যাপ্ত ডাস্টবিন না থাকায় মানুষ নিয়মমাফিক আবর্জনা ফেলার সুযোগ পাচ্ছে না। নাগরিকদের অভিযোগ, শহরের অল্পসংখ্যক ডাস্টবিনও নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। অনেক সময় ডাস্টবিন ভেঙে বা উল্টে পড়ে থাকে, যার ফলে রাস্তায় আবর্জনার স্তূপ তৈরি হয়। শহরের ৭ নং ওয়ার্ডের সুপরিচিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কবি নজরুল শিক্ষা মঞ্জিলের প্রধান গেটের সামনে ছোটখাটো ময়লার ভাগাড় গড়ে উঠেছে। এতে শিক্ষার্থীরা দুর্গন্ধপূর্ণ ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ক্লাস করতে বাধ্য হচ্ছে। অভিভাবকরা জানিয়েছেন, এটি শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলছে। শুধু নজ রুল স্কুল নয়। শহরের শহিদ গফুর সড়ক, যাদবপুর রোড, কাঁসাড়িপাড়া, হোটেল বাজার শহরের এমন কোন জায়গা নেই খোনে ময়লা ছড়িয়ে ছিটিয়ে নেই। সাংবাদিক মেহেরাব হোসেন বলেন, শহরের প্রবেশদ্বার ওয়াবদা সড়কের দু’পাশেও নিয়মিতভাবে ময়লা ফেলা হচ্ছে, যা ধীরে ধীরে অস্থায়ী ভাগাড়ে রূপান্তরিত হচ্ছেদ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে শুধু পরিবেশই নয়, নাগরিক জীবনের মানও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। মেহেরপুর হোটেল বাজারের আতিকুজ্জামান অভিযোগ করে বলেন, “আমরা বছরের পর বছর পৌর ট্যাক্স দিচ্ছি, কিন্তু পরিচ্ছন্ন শহর পাচ্ছি না। পৌরসভার একশোর বেশি পরিচ্ছন্ন কর্মী থাকলেও কার্যকর তদারকি নেই। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে বাধ্য হয়ে সবাই পৌরসভার গেটেই ময়লা ফেলতে বাধ্য হবে।” মেহেরপুর কলেজ রোডের আমিত সাহা নামে একজন বলেন, মেহেরপুর কলেজ থেকে সিভিল সার্জন অফিস পর্যন্ত রাস্তা দিয়ে হাটা যায়না। গত তিনদিন ধরে কুকুর মরে গন্ধ ছড়াচ্ছে। পৌর কর্তৃপক্ষ কোন গা নেই। এ দুঘন্ধে পরিবেশ দুষিত হচ্ছে। কিন্তু দেখবে কে এ গুলো। এ বিষয়ে মেহেরপুর পৌরসভার প্রশাসক পার্থ প্রীতম শীল জানান, পরিচ্ছন্নকর্মীদের কার্যক্রম নিয়মিত তদারকি করা হচ্ছে। শিগগিরই পরিচ্ছন্ন অভিযান শুরু হবে এবং কয়েক দিনের মধ্যে পুরো শহর পরিষ্কার করা হবে। তিনি আরও বলেন, বাসা-বাড়ির ময়লা রাস্তায় ফেলার বিষয়েও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নাগরিকরা আশা করছেন, পৌরসভার দায়িত্বশীল পদক্ষেপের মাধ্যমে শহর অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ থেকে মুক্তি পাবে এবং মেহেরপুর শহর আবার পরিচ্ছন্ন ও বাসযোগ্য হবে।
পূর্ববর্তী পোস্ট