Home » মেহেরপুর থেকে বিলুপ্তি বাবুই পাখির ও তার বাসা

মেহেরপুর থেকে বিলুপ্তি বাবুই পাখির ও তার বাসা

কর্তৃক Shariar Imran Mati
মোঃ কামাল হোসেন খাঁন 26 ভিউ
Print Friendly, PDF & Email

বাবুই পাখি নিয়ে অনেক কবিতা,গান ও ছড়া থাকলেও নেই শুধু বাবুই পাখির কিচিরমিচির ডাক। দেশ থেকে পাখিটির বাসস্থান তালগাছ, নারিকেল গাছ ও খেজুর গাছ হারিয়ে যাওয়াসহ পাখি শিকারী ও নানা কারণে নির্বিচারে পাখি হত্যার কারণেই বাবুই পাখি বিলুপ্তির পথে চলে যাওয়ায় শোনা যায় না তার কিচিরমিচির ডাক।

তবে আজব এক বরই গাছের সন্ধান মিলেছে যেখানে দেখা মিলবে হাজারও বাবুই পাখি আর শোনা যাবে কিচিরমিচির ডাক। যা শুনে আপনার মন জুড়িয়ে যাবে। আর আজব সেই বরই গাছের সন্ধান মিলেছে মেহেরপুর সদর উপজেলার বারাদী ইউনিয়নের যুগিন্দা গ্রামে। যুগিন্দা জামে মসজিদের পাশেই তিনাজউদ্দীন ভ্যারাইটি স্টোরের স্বত্বাধিকারী তামিম এর বসতবাড়ীর উঠানেই রয়েছে সে বরই গাছটি। গ্রামে অসংখ্য বরই গাছ থাকলেও তামিমের বসতবাড়ীর গাছটিতেই বাবুই পাখিরা আশ্রয় নিয়েছে। এজন্যই এটাকে আজব গাছ মমে করা হচ্ছে।

তামিম জানান, প্রায় ১ মাস ধরে এসব বাবুই পাখি তিনার বরই গাছে আশ্রয় নিয়েছে। সারাদিনে বিভিন্ন যায়গায় থাকলেও সন্ধার পূর্ব মূহুর্তে এসব বাবুই পাখিরা বরই গাছে এসে কিচিরমিচির শুরু করে। শতশত বাবুই পাখি এ গাছে থাকলেও বরই পাতার কারণে পাখিগুলোকে দেখা প্রায় অসম্ভব। শুধু এ গাছেই নয় আশে-পাশের কিছু গাছেও এসব বাবুই পাখি বসে কিচিরমিচির করে থাকে তবে সংখ্যায় একেবারে নগন্য।

সাধারণত: তালগাছ, নারিকেল গাছ, খেজুর গাছ, বসতবাড়ীর বর্গার নিচে, দেয়ালের ফাঁকে, কার্নিশের নিচেসহ বিভিন্ন যায়গায় বাবুই পাখি বাসা বেঁধে থাকলেও গ্রামের মাঠ, বিল, পুকুর ও নদীর ধারে এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকা তালগাছ কমে যাওয়ার সাথে সাথে হারিয়ে যেতে বসেছে শিল্পী মনা বাবুই পাখি। নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন, কৃষি ফসলে কীটনাশকের ব্যবহার, শিকারীদের দৌরাত্ম, অপরিকল্পিত ভাবে বাড়ি নির্মাণের ফলে জনবসতি বৃদ্ধি পাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুপ প্রভাবে বিলুপ্ত হতে চলেছে বাবুই পাখি বলে মন্তব্য করেন গাংনী উপজেলার মাইলমারী-টেংরামারী দাখিল মডেল মাদ্রাসার সুপার হাফিজ মাওলানা ফিরোজুল ইসলাম সিদ্দিকী।

মাইলমারী গ্রামের কবিরুল জানান, তিনাদের বাড়ীর পাশে কয়েকটি তালগাছে বাবুই পাখি বাসা বাঁধলেও এখন আর তার দেখা মেলেনা। ঝড়বৃষ্টিতে বাসা খুলে পড়া ও পাড়াতে মানব জাতীর ঘনবসতিসহ নানা কারণে সেখানের বাবুই পাখি অন্যত্র চলে গেছে।

এছাড়াও ইউপি সদস্য কাবের আলীর পুকুরের পাড়, মরহুম মঙ্গলের বাড়ির পাশের কয়েকটি তালগাছে বাবুই পাখির অসংখ্য বাসা দেখা গেলেও মেলেনি একটি বাবুই পাখিরও দেখা।

এমনি ভাবে জেলার নওপাড়া, লক্ষ্মীনারায়নপুর, হাড়াভাঙ্গা, ষোলটাকা, জুগিরগোফা, ধানখোলা, হোগলবাড়ীয়া, আযান গ্রাম, চৌগাছা, চিৎলা, গাড়াডোব, হরিরামপুর, গোভীপুর, হিজুলী, রাজনগর, আমঝুপি, কুতুবপুর ও কেদারগঞ্জসহ অধিকাংশ এলাকায় বাবুই পাখি ও তার বাসা দেখা গেলেও তা আজ বিলুপ্তির পথে। শুধু বাবুই পাখিই নয় মাঠ-ঘাট, খাল-বিল, ডোবাসহ জঙ্গলের সকল ধরনের পাখি আজ বিলুপ্তির পথে। শীতের আগমনী বার্তায় দেশের বাইরে থেকে আসা অতিথি পাখির দেখা মেলাও দুরূহ ব্যাপার। অতিমাত্রায় বনভূমি ধ্বংস করার কারণে জীববৈচিত্র্য বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। যে কারণে হারিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। সরকারি নির্দেশনায় পাখি নিধন ও তাদের আবাসস্থল ধ্বংসকারীদের কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে। এর সঠিক প্রয়োগ ও রাস্তার দু’পাশে গাছ লাগিয়ে পাখিদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় গড়ে তোলা সম্ভব বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করেন।

০ কমেন্ট

রিলেটেড পোস্ট

মতামত দিন


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.