Home » মেহেরপুরে শিক্ষা প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

মেহেরপুরে শিক্ষা প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

কর্তৃক Mahabobul Haque Polen
নিজস্ব প্রতিবেদক 89 ভিউ
Print Friendly, PDF & Email

মেহেরপুর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল আহসানের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছে মের্সাস সৈকত এন্টারপ্রাইজ কুষ্টিয়া। গত ১৩ অক্টোবর সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবি মোঃ রেজাউল করীমের মাধ্যমে তিনি এ লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে কাজের সময় বৃদ্ধিতে টাকা নেওয়া সহ বিস্তর অভিযোগ উঠেছে।
লিগ্যাল নোটিশে বলেছেন,গত ০৮ সেপ্টেম্বর শিক্ষা প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে ৩টি দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্রে আইন বর্হিভূত, মনগড়া, কাল্পনিক ভাবে দরপত্র মূল্যায়নের নির্ণয়ক ধার্যক করেছেন। সিপিটিইউ এর আদর্শ দলিলে ই, পি ডাব্লউিটু, এ সিভি,পিপিআর ২০০৬ ও ২০০৮ এর দরপত্র মূল্যায়নে এমন কোন নির্ণয়ক উল্লেখ না থাকা সত্ত্বেও তিনি মনগড়া নির্নয়ক উল্লেখ করেছেন এর কারনে মের্সাস সৈকত এন্টারপ্রাইজ ব্যবসায়িক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
এছাড়া দরপত্র মূল্যায়নে পিপিআর ২০০৬ ও ২০০৮ এর দরপত্র আদর্শ দলিলে উল্লেখ না থাকা সত্ত্বেও সেটা উল্লেখ করে আইন অমান্য করেছেন।
এদিকে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল আহসানের বিরুদ্ধে কাজের সময় বৃদ্ধি করতে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও প্রধান প্রকৌশলীর নাম ভাঙিয়ে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়া সহ কমিশনে টেন্ডার বাণিজ্যের অভিযোগ করেছে গাংনীর রানা নামের এক ঠিকাদার।
এছাড়া তার ক্ষমতার দাপটে তার দুর্নীতি ও অনিয়ম কোনো ভাবেই বন্ধ হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি একারনে শিক্ষা প্রকৌশল অধিপ্তরকে অনিয়ম ও দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য বানিয়েছেন।
একাধিক ঠিকাদার জানান, নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল আহসান বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমল থেকে মেহেরপুরে কর্মরত রয়েছেন। দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে থাকার কারনে কতিপয় ঠিকাদারদের সঙ্গে যোগসাজশে অনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে দরপত্রের গোপন মূল্য বা রেট শিডিউল ফাঁস করে কমিশন বাণিজ্যের মাধ্যমে কাজ পাইয়ে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
এছাড় গত ১১/০৯/২০২৫ তারিখে ফার্নিচার ক্রয়ের ওপেনিং টেন্ডারে ৭ গ্রুপের কাজ থাকলেও ১০ জন ঠিকাদার এই কাজে অংশগ্রহন করেন। কিন্তু নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল আহসান ৭ গ্রুপের কাজ অনৈতিক সুবিধা নিয়ে ৫জন ঠিকাদের মাঝে ভাগ করে দেন। অথচ উক্ত টেন্ডারে ১০ জন ঠিকাদার অংশগ্রহন করেছিল। তিনি পিপিআর ২০০৮ সালের নিয়ম ভঙ্গ করে, ৫জন ঠিকাদারদের কাজ দেন। কাজ পাইয়ে দেয়া ঠিকাদারদের সিমিলার না থাকায় পরবর্তীতে ভুয়া কাগজপত্র তৈরী করে তাদের কাজ দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে মেহেরপুরের ঠিকাদারের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল আহসানের বিরুদ্ধে অনিয়মিত অফিস করা সহ ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে অসৌজন্যমুলক আচরনের অভিযোগ উঠেছে।
নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল আহসান চাকুরী পাওয়ার পর থেকে অবৈধ আয়ের মাধ্যমে নামে বেনামে বিপুল অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।
চাপাইনবাবগঞ্জে কর্মরত থাকার সময় আওয়ামীলীগের দাপট দেখিয়ে ঠিকাদারদের সঙ্গে যোগসাজসে ইচ্ছেমতো টেন্ডার ভাগাভাগি করছেন। সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে তিনি কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য নিজেই ঠিকাদারদের মধ্যে কমিশনের টেন্ডার আহ্বান করেন। তাকে যে ঠিকাদার সর্বোচ্চ কমিশন দিতে চান তাকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। এদিকে চাপাইনবাবগঞ্জে নানা অনিয়মের কারনে গত ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ সালে মেহেরপুরে বদলী করলেও এখানেও নানা অনিয়মের সাথে জড়িয়ে পড়েছেন।
অবৈধ সম্পদের মালিক বনে যাওয়া প্রকৌশলী রাকিবুল আহসানের দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত করতে দুর্নীতি দমন কমিশন রাজশাহী।
মেহেরেপুর কর্মরত থাকা অবস্থায় নানা অনিয়মের কারনে গত ১৬ অক্টোবর তাকে যশোরে বদলী করা হলেও তার অনিয়মের নানা চিত্র জানাজানি হলে তাকে যশোরেও যোগদান করতে দেয়নি স্থানীয় ঠিকাদাররা এমনকি তার যোগদান ঠেকাতে বিক্ষোভও করেছেন বলে কয়েকজন ঠিকাদার জানিয়েছেন।
এদিকে সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবি মোঃ রেজাউল করীম বলেন, তার মক্কেলকে নানা ভাবে ক্ষত্রিগ্রস্থ করা হয়েছে এ কারনে তিনি লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছেন।
রাজশাহী দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল আহসানের নামে দুদকের তথ্য অনুসন্ধান চলমান রয়েছে।
এ বিষয়ে ঠিকাদার আনোয়ার হোসেন সহ একাধিক ঠিকাদার বলেন, নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল আহসান যোগদানের পর থেকে ঠিকাদারদের জিম্মি করে বিপুল পরিমান টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
স্থানীয় ঠিকাদার রানা বলেন,কাজের সময় বৃদ্ধির সহ কাজের বিল পেতে প্রকৌশলী রাকিবুল আহসানকে টাকা দিতে হয়। টাকা না দিলে নানা ভাবে হয়রানী করেন।
এ বিষয়ে প্রকৌশলী রাকিবুল আহসান বলেন, একদম ঠিকাদার নোটিশ দিয়েছেন। তিনি তা দিতেই পারেন তবে তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ অসত্য।

 

রিলেটেড পোস্ট

মতামত দিন


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.