Home » মেহেরপুরে বাণিজ্যিকভাবে দেশীয় মাছ চাষের প্রসার

মেহেরপুরে বাণিজ্যিকভাবে দেশীয় মাছ চাষের প্রসার

কর্তৃক Mahabobul Haque Polen
নিজস্ব প্রতিবেদক 21 ভিউ
Print Friendly, PDF & Email

কৃত্রিম উপায়ে দেশীয় প্রজাতির মাছ চাষের সম্ভাবনা সৃষ্টি হওয়ায় মেহেরপুর জেলায় বাণিজ্যিকভাবে দেশীয় মাছ চাষের ব্যাপক সম্প্রসারণ ঘটছে। শিং, মাগুর, কৈ, টেংরা, পুঁটি প্রভৃতি দেশীয় মাছ স্বাদে ও পুষ্টিগুণে উন্নত হওয়ায় ভোক্তাদের আগ্রহও ক্রমেই বাড়ছে। মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, দেশীয় মাছ সাধারণত কম রাসায়নিক ব্যবহারেই চাষ করা যায়। এসব মাছ পরিবেশবান্ধব, স্বাস্থ্যসম্মত এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও তুলনামূলকভাবে বেশি। ফলে খাদ্য, ওষুধ ও রক্ষণাবেক্ষণ খরচ কম হওয়ায় চাষিরা সহজেই লাভবান হচ্ছেন। জেলা মৎস্য বিভাগের উদ্যোগে সদর, মুজিবনগর ও গাংনী উপজেলায় রাজস্ব খাতের আওতায় তিনটি দেশীয় মাছ চাষ প্রদর্শনী প্লট তৈরি করা হয়েছে। বর্তমানে ১৯ জন চাষি বাণিজ্যিকভাবে দেশীয় মাছ চাষে যুক্ত আছেন। সদর উপজেলার ঝাউবাড়িয়া গ্রামের বড় মৎস্য খামারি শাহিন মল্লিক ২৪ বিঘা জমির ছয়টি পুকুরে মাগুর, শিং, টেংরা, পাবদা ও পুঁটিসহ বিভিন্ন দেশীয় মাছ চাষ করছেন। সরেজমিনে দেখা যায়, পারিবারিক চাহিদা মিটিয়েও তিনি সফলভাবে বাণিজ্যিক চাষ পরিচালনা করছেন। শাহিন মল্লিক জানান, ২০১১ সালে প্রথম তিনি ক্যাটফিশ জাতের মাছ চাষ শুরু করেন। বর্তমানে বছরে প্রায় কোটি টাকার লেনদেন হয় এবং গড়ে ২০ লাখ টাকার বেশি লাভ করে আসছেন। যদিও মাছের খাবারের দাম বাড়ায় লাভ কিছুটা কমে গেছে।
তিনি বলেন, “বাড়ির পাশে ছোট পুকুর বা খালেও দেশীয় মাছ চাষ করে ভালো আয় করা যায়। ভবিষ্যতে নিজস্ব হ্যাচারি স্থাপনের পরিকল্পনা করছি, এতে নিজেই পোনা উৎপাদন করে খরচ কমিয়ে চাষ বাড়াতে পারব।” শাহিনের সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে জেলার অনেক তরুণ ও শিক্ষিত যুবক এখন বাণিজ্যিকভাবে দেশীয় মাছ চাষে যুক্ত হচ্ছেন। মেহেরপুরের মাছ ব্যবসায়ী ভক্ত হালদার জানান, “ইলিশের পরেই দেশীয় মাছের চাহিদা বেশি। অতিথি আপ্যায়ন ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ছোট মাছের চাহিদা বেড়েছে, ফলে দামও ভালো পাওয়া যায়।” জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সাধন চন্দ্র সরকার বলেন, “দেশীয় প্রজাতির মাছ খাদ্য নিরাপত্তা, পুষ্টি সরবরাহ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বর্তমানে ১৯ জন চাষি বাণিজ্যিকভাবে দেশীয় মাছ চাষ করছেন। এটি জলজ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণেও সহায়ক।” তিনি আরও বলেন, একজন সফল চাষি বছরে ১৫ টন পর্যন্ত দেশীয় মাছ উৎপাদন করে লক্ষাধিক টাকা আয় করতে পারেন। সরকারি সহায়তা, প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে এই খাত দ্রুত বিকশিত হচ্ছে।

০ কমেন্ট

রিলেটেড পোস্ট

মতামত দিন


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.