‘আমি যখন ২০ লাখ টাকার লটারি জিতেছি এমন একটি ফোন পাই, তখন ভয়ে ফোন কেটে দেই। মনে করেছিলাম কোনো প্রতারকদের খপ্পরে পড়েছি। পরে একাধিকবার ফোনে আমাকে নিশ্চিত করে। কথাটি প্রথমে মাকে বলতে গিয়ে আমার চোখ ভিজে গিয়েছিল। এই টাকা আমার ভাগ্য বদলে সহায়ক হবে। এই ২০ লাখ টাকা দিয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি কৃষি জমি কিনে মা-বাবার নামে দেব।’
কথাগুলো বলছিলেন ওয়ালটনের ফ্রিজ কিনে ২০ লাখ টাকার পুরস্কার পাওয়া মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার রাইপুর ইউনিয়নের বাথানপাড়া গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলামের ছেলে কলেজছাত্র রাশেদ। তিনি গাংনী সরকারি ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
রাশেদ বলেন, আমাদের অভাবের সংসার। তিন ভাই-বোন ও মা-বাবা মিলে ৫ জনের সংসারে বাবার রোজগারে সংসার চলে। মাঠে তেমন জমিজমাও নেই। এই টাকায় আমার বাবার হাতে তুলে দিয়ে বাবাকে সহায়তা করতে পেরে খুবই আনন্দ লাগছে।
তিনি জানান, গাংনীর ওয়ালটন শোরুম মেসার্স সাজু এন্টারপ্রাইজ থেকে ফ্রিজ কেনেন গত ২৭ অক্টোবর। ডাবল মিলিয়ন অফার চলাকালীন ফ্রিজ কিনে ২০ লাখ টাকা পুরস্কার পান। গত সোমবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর চিত্রনায়ক আমিন খান তার হাতে ২০ লাখ টাকার চেক তুলে দেন।
রাশেদের বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন, এই টাকা দিয়ে আমার ছেলের জীবন বদলে দেব। তাকে লেখাপড়া শিখে মানুষ হতে হবে।
মা বেলিয়ারা খাতুন বলেন, আমি প্রথমে বিশ্নাস করতে পারছিলাম না। গরিবের কপালে এতবড় পাওয়া আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া।
গাংনীর ওয়ালটন শোরুম সাজু এন্টারপ্রাইজের মালিক মাহবুবুল বারী সাজু জানান, কলেজছাত্র রাশেদ ওয়াইএইচ ফাইভ মডেলের একটি ফ্রিজ ক্রয় করে ডাবল মিলিয়ন অফারে ২০ লাখ টাকা পুরস্কার পেয়েছেন। ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর জনপ্রিয় চিত্রনায়ক আমিন খানসহ ওয়ালটনের কর্মকর্তারা তার হাতে চেক তুলে দেন।
তিনি বলেন, ফ্রিজ, টিভি, ওয়াশিং মেশিন বা বিএলডিসি ফ্যান কিনে ক্রেতারা পেতে পারেন ২০ লাখ টাকা। এই অফার ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলছে। তবে কর্তৃপক্ষ চাইলে সময় বৃদ্ধি হতে পারে।
ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর চিত্রনায়ক আমিন খান বলেন, ওয়ালটন একটি দেশীয় পণ্য। এ পণ্য যত কিনবেন দেশ ততই সমৃদ্ধ হবে, আর্থিকভাবে সাবলম্বী হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের তৈরি ওয়ালটন এখন আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন। এ পণ্য কিনে দেশের কয়েক হাজার মানুষ পুরস্কার জিতে সাবলম্বী হয়েছে। ওয়ালটনের এ ধারা অব্যাহত থাকবে। ওয়ালটন কারও সঙ্গে প্রতারণা করে না। আমরা ঢাকা থেকে গাংনীতে পুরস্কারের টাকা পৌঁছে দিতে এসেছি। আমরা এটাই প্রমাণ করেছি ওয়ালটন আছে দেশের প্রতিটি গ্রামে। প্রতিটি মানুষের মনে প্রাণে।
পুরস্কার বিতরণ উপলক্ষ্যে এর আগে গাংনী বাজারের ওয়ালটন শোরুম থেকে একটি শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে একই স্থানে শেষ হয়। পরে মঞ্চে সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পীরা।
পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এবং ডিস্ট্রিবিউটর টেওয়ার্কের হেড অব সেলস ফিরোজ আলম, চিফ মার্কেটিং অফিসার (সিএমও) গালীব বিন মোহাম্মদ, ডেপুটি সিএমও জোহেব আহমেদ, এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মো. মনিরুল হক, ওয়ালটনের ডিস্ট্রিবিউটর শোরুম সাজু এন্টারপ্রাইজের মালিক মাহাবুবুল বারী প্রমুখ।