মেহেরপুরের গাংনীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত কর্মী সমাবেশে বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের তিন শতাধিক নেতা–কর্মীর যোগদান দাবি করেছে জামায়াত। বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) বিকেল ৩টায় তেঁতুলবাড়িয়া ইউনিয়নের পলাশীপাড়া পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত এ সমাবেশে নতুন যোগদানকারীদের ফুল দিয়ে বরণ করা হয়।
সমাবেশে তেঁতুলবাড়িয়া ইউনিয়নের ৬ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডসহ আশপাশের এলাকার প্রায় ৩০০ নেতা–কর্মীর নাম পড়া হয়। যোগদানকারীদের মধ্যে ছিলেন—
মো. আব্দুল বারী, মো. হাবিবুল বাসার, আলমগীর হোসেন, রাতুল ইসলাম, মোশারেফ হোসেন, জিল্লুর রহমান, বিশারত আলী, ইমরান, রুবেল হোসেন, আমজাদ হোসেন, আবুল কাশেম, আব্দুল কাফি, আ. কাদের, আতিয়ার রহমান, রাজিবুল ইসলাম, আরিফুল ইসলাম, তোফাজ্জেল হোসেন, নবিছুদ্দীন, জিয়াউর রহমান, ওবিরুল ইসলাম প্রমুখ।
এছাড়া ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আনছার আলী, নিয়ামত, শাহিদুল, রখেদের আলী, জলিল, শাহিন, জিনঝিল, আলক্ষীর, সাগর, কাফিরুল, জালাল, আশিকুল, কাদর, জামরুল, আতাহার ও আমিরুল ইসলামসহ আরও বহু কর্মীর নাম ঘোষণা করা হয়।
সমাবেশে মেহেরপুর–২ (গাংনী) আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মো. নাজমুল হুদা বলেন,
“আজ আমরা মুক্তভাবে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালাতে পারছি। অথচ একসময় আমাদের নিশ্চিহ্ন করতে চক্রান্ত হয়েছিল, কিন্তু তারা সফল হয়নি। গত পাঁচ অর্থবছরে তারা যে পরিমাণ টাকা বিদেশে পাচার করেছে, তা দিয়ে ৫৭টি পদ্মা সেতু নির্মাণ করা যেত।”
তিনি আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে সরকারি বিশেষ সুবিধা বা বিলাসবহুল গাড়ি ব্যবহার না করার অঙ্গীকার করেন। তার ভাষায়,
“ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক একটি দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়াই আমাদের লক্ষ্য। আজকের ব্যাপক যোগদান আমাদের সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করবে।”
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন—জামায়াতে ইসলামী মেহেরপুর জেলা শাখার রাজনৈতিক সেক্রেটারি মাওলানা কাজী রুহুল আমিন, গাংনী উপজেলা আমির মো. রবিউল ইসলাম, উপজেলা সেক্রেটারি মাওলানা জাহাঙ্গীর আলমসহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতারা।
বিএনপির পাল্টা সংবাদ সম্মেলন: ‘ভোটব্যাংক দুর্বল দেখাতে মিথ্যা প্রচারণা’
জামায়াতের এ যোগদান অনুষ্ঠান ঘিরে একই দিন তেঁতুলবাড়িয়া ইউনিয়নের বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তারা অভিযোগ করেন,
“জামায়াত বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে। যাদের বিএনপি বা অন্যান্য দল থেকে আসা নতুন কর্মী বলা হচ্ছে—তারা আগে থেকেই জামায়াত বা তাদের সহযোগী সংগঠনের কর্মী ছিলেন।”
বিএনপি নেতারা দাবি করেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির জনপ্রিয়তা কমানোর উদ্দেশ্যে জামায়াত ‘পরিকল্পিতভাবে নাটক সাজিয়েছে’। তারা বলেন,
“বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আমজাদ হোসেনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে শত শত কর্মীর নাম ব্যবহার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে বিএনপি থেকে কোনো সংগঠিত যোগদান জামায়াতে হয়নি।”
নেতারা আরও বলেন,
“তেঁতুলবাড়িয়া ইউনিয়নে বিএনপি সংগঠিত ও শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। জামায়াত নিজেদের দুর্বলতা ঢাকতে মিথ্যা যোগদানের গল্প ছড়াচ্ছে। মানুষ এসব বিভ্রান্তিতে বিশ্বাস করবে না।”
এক অনুষ্ঠানে যোগদানের দাবি ও অপর পক্ষের পাল্টা অভিযোগে গাংনী অঞ্চলে রাজনৈতিক উত্তাপ আরও বেড়ে গেছে। স্থানীয় পর্যায়ে এই বিরোধ আগামী নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে প্রভাবিত করতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।

