রাশিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধের মাঝে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে একটি সংশোধিত শান্তি পরিকল্পনা জমা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইউক্রেন। তবে নিজেদের ভূখণ্ড থেকে এক ইঞ্চিও ছাড় দিতে রাজি নয় কিয়েভ। প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, কোনো অবস্থাতেই জমি ছেড়ে দেওয়ার অধিকার তাঁর নেই—এটি ইউক্রেনের সংবিধান, আইন ও আন্তর্জাতিক বিধানের পরিপন্থী। খবর বিবিসি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটো নেতাদের সঙ্গে সোমবারের বৈঠকের পর জেলেনস্কি জানান, রাশিয়া শান্তিচুক্তির অংশ হিসেবে ইউক্রেনকে জমি ছেড়ে দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। কিন্তু নিজেদের ভূমি রক্ষায় ইউক্রেন আপসহীন। ইউক্রেনীয় ও ইউরোপীয় কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রদান করা ২০ দফা প্রস্তাব নিয়ে কাজ করছেন। সেই প্রস্তাবের পাল্টা পরিকল্পনা মঙ্গলবার সন্ধ্যার মধ্যেই প্রস্তুত হতে পারে। পরে এটি ওয়াশিংটনে পাঠানো হবে। আলোচনায় যুক্ত এক কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডের প্রশ্ন আলোচনার সবচেয়ে জটিল অংশ। পাশাপাশি কিয়েভের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিশ্চয়তার বিষয়টিও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইউরোপীয় নেতারা মনে করছেন, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে শান্তি পরিকল্পনার খসড়া সংশোধনে কিছু অগ্রগতি হলেও এখন পরিস্থিতি অত্যন্ত সংকটপূর্ণ। সোমবার ডাউনিং স্ট্রিটে জেলেনস্কি, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ এবং জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্ৎস জরুরি বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠক শেষে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানায়, ইউক্রেনকে আরও সহায়তা বাড়ানো এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর অর্থনৈতিক চাপ আরও জোরদার করার বিষয়ে ইউক্রেনপক্ষের ইউরোপীয় মিত্ররা ঐকমত্যে পৌঁছেছে। তাদের ভাষায়—মস্কোর ‘বর্বর’ আগ্রাসন থামানোর প্রচেষ্টায় এখন একটি সংকটময় সময় চলছে। এদিকে উত্তর-পশ্চিম ইউক্রেনের সুমি শহর রাশিয়ার ড্রোন হামলার পর রাতভর বিদ্যুৎহীন থাকে। স্থানীয় গভর্নর জানান, ডজনখানেক ড্রোন স্থানীয় বিদ্যুৎ অবকাঠামোয় হামলা চালিয়েছে। চলমান যুদ্ধের এই কঠিন মুহূর্তে ইউক্রেনের নতুন শান্তি পরিকল্পনা পশ্চিমাদের সিদ্ধান্ত এবং রাশিয়ার প্রতিক্রিয়ায় নতুন সমীকরণ তৈরি করতে পারে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।

