কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মো. রাশিদুল জাম্মান (৫৫) নামে এক বিএনপি নেতাকে হাতুড়ি দিয়ে ব্যাপক মারধর ও কার্যালয়ে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। বিএনপির আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে প্রতিপক্ষের ছত্রছায়ায় এ হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার কয়া ইউনিয়নের কালোয়া বাজারে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় রোববার সকালে আটজনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন আহত বিএনপি নেতার ভাই দুলাল শেখ।
আহত মো. রাশিদুল জাম্মান কয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য। তিনি বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
দুপুরে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ২ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আহত বিএনপি নেতা রাশিদুল জাম্মান। তার হাত, মুখ, পিঠ, পায়ের মাংসপেশিতে আঘাতের ক্ষত।
এসময় আহত রাশিদুল জাম্মান বলেন, কালোয়া বাজারে আমার একটি দলীয় কার্যালয় রয়েছে। শনিবার রাতে প্রতিপক্ষের বিএনপি নেতাদের ছত্রছায়ায় কয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হাজীর ভাই সোহেল, ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি ওলি জোয়ার্দার, ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মিন্টু খন্দকার, আওয়ামী লীগের সমর্থক মো. ইয়ারুলসহ ১০-১২ জন দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে আমার ওপর হামলা চালায়। তারা দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর করেছে। সুষ্ঠু বিচারের আশায় থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি। মামলা করা হবে। তবে তিনি প্রতিপক্ষের কারো নাম বলেননি।
অভিযোগ অস্বীকার করে কয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি ওলি জোয়ার্দার মুঠোফোনে বলেন, বিএনপির দুই গ্রুপের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে হামলার খবর শুনেছি। তবে এর সঙ্গে আওয়ামী লীগ জড়িত নয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কালোয়া বাজারটি ৯ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত। সেখানে ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নেতাকর্মীদের একটি বিএনপির কার্যালয় রয়েছে। সম্প্রতি রাশিদুল জাম্মান আরেকটি কার্যালয় খুলেছে। এ নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল। একপর্যায়ে শনিবার রাতে ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। আর অভিযুক্তরা ৫ আগস্টের আগে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে থাকলেও বর্তমানে ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সঙ্গে চলাফেরা করছেন।
হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য বকুল হোসেন বলেন, অন্য এলাকা থেকে এসে রাশিদুল বাজারের শান্তি নষ্ট করছে। তবে কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি। রাশিদুল নিজেই ছবি খুলে নিয়ে চলে গেছে।
অভ্যন্তরীণ কোন্দলে হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার জিয়াউর রহমান। তিনি বলেন, আহত বিএনপি নেতার ভাই লিখিত অভিযোগ করেছেন। মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।