Home » কুষ্টিয়ায় কাপড় ব্যবসায়ীর পুরুষাঙ্গ কর্তন, ৭ হিজড়া কারাগারে

কুষ্টিয়ায় কাপড় ব্যবসায়ীর পুরুষাঙ্গ কর্তন, ৭ হিজড়া কারাগারে

কর্তৃক Shariar Imran Mati
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি 74 ভিউ
Print Friendly, PDF & Email

কুষ্টিয়ার মিরপুরে কাপড় ব্যবসায়ী শিপন আলীকে (৩৯) কৌশলে অপহরণ করে পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলার মামলার অভিযুক্ত ৭ হিজড়া কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। বুধবার (১২ মার্চ) দুপুরের দিকে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মামুনুর রহমান এ আদেশ দেন।

কৌশলে অপহরণ করে পুরুষাঙ্গ কর্তন মামলার আসামিরা কুষ্টিয়া চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে তাদেরকে কুষ্টিয়া কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

কারাগারে পাঠানো আসামিরা হলেন- কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ওয়াপদা সাইকেল স্ট্যান্ড এলাকার দুর্লভ প্রামানিকের ছেলে ইমন ওরফে নেহা (২৮), একই এলাকার সোহেল রানার ছেলে বাঁধন ওরফে বেলী (২৬), আব্দুর রহমানের ছেলে মিজান ওরফে আঁখি (৩৬), নজু জোয়াদ্দারের ছেলে মিন্টু ওরফে ফুলি (২৮), মৃত জাহাঙ্গীরের ছেলে আলামিন ওরফে পানি (২৯), ইয়ার আলীর ছেলে হৃদয় ওরফে পাখি (২১) ও আকবার আলীর ছেলে জাফর ওরফে সোনালী (২৬)।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বিকালে কাপড় ব্যবসায়ী শিপন আলীকে কুষ্টিয়া শহরের চৌড়হাস থেকে কৌশলে অপহরণ করে মিরপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তার শরীর থেকে পুরুষাঙ্গ বিচ্ছিন্ন করে আসামিরা। এরপর তাকে ১৫ দিন আটকিয়ে রাখা হয়। পরে কৌশলে পালিয়ে এসে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন শিপন।

এ ঘটনায় গত ১০ মার্চ মিরপুর থানায় মামলা দায়ের করেন শিপন আলী। মামলায় মোট ৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ৫-৬ জনকে। বাদী ও ভুক্তভোগী শিপন আলী (৩৯) কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পুরাতন কুষ্টিয়া এলাকার বিরাদ আলীর ছেলে।

এজাহারে উল্লেখ করেছেন, আসামিরা অত্যান্ত খারাপ প্রকৃতির লোক। আমি একজন ভ্রাম্যমান কাপড় ব্যবসায়ি। কাপড় বিক্রয়ের সুবাদে নেহা, আখি ও বেলী নামের আসামীদের সাথে আমার পরিচয় হয় এবং সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। তারা মাঝে মধ্যেই আমার নিকট থেকে নগদে ও বাকীতে কাপড় ক্রয় করতো। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বিকাল অনুমান চারটার আসামী নেহা, আখি, বেলী, ফুলি ও পানি কুষ্টিয়া শহরের চৌড়হাস এলাকায় আসে এবং আমার নিকট থেকে ৫টি শাড়ী ক্রয় করে। ক্রয়কৃত শাড়ীর টাকা নেওয়া জন্য আমাকে তাদের সাথে মিরপুর এলাকায় যেতে বলে। তখন আমি কাপড় নিয়ে আসামীদের সাথে সিএনজি যোগে সেদিন বিকাল অনুমান ৫টার সময় কুষ্টিয়া মিরপুরের ওয়াপদা এলাকায় সাইকেল স্টান্ড সংলগ্ন এক নম্বর আসামি নেহার বসত বাড়ীতে পৌঁছাই এবং শাড়ী ক্রয়ের বাকী টাকা পরিশোধ করে দেয়।

এক পর্যায়ে আসামীরা আমাকে খাবার খেতে দিলে আমি সরল বিশ্বাসে খাবার খাওয়ার কিছুক্ষন পর আমার মাথা ঝিনঝিন করতে থাকে এবং আমি অচেতন হয়ে যায়। পরবর্তীতে রাতের বেলায় আমার জ্ঞান ফিরলে আমি দেখিতে পাই যে, দুই নম্বর আসামি বেলির হাটুর উপরে মাথা দিয়ে আমি শুয়ে আছি এবং অন্যান্য আসামীরা আমার আশপাশে বসে আছে। তখন আমি বুঝতে পারি যে, আসামীরা পরস্পর যোগসাজশে আমার পুরুষাঙ্গ কর্তন করিয়া অপারেশন পূর্বক তৃতীয় লিঙ্গে রুপান্তর করেছে। তখন আমি ভীষন অসুস্থ অবস্থায় আসামীদের এহেন কার্যকলাপ করার কারণ জিজ্ঞাসা করলে তারা কোন সদুত্তোর দেয়নি।

বরং আমাকে অধৈভাবে জোরপূর্বক নেহার বাড়ীতে আটক করে রাখে। এইভাবে আমার দীর্ঘদিন আটক রাখার পর আমি সুযোগ বুঝে কৌশলে গত ৩ মার্চ সেখান থেকে পালিয়ে আসি এবং ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়।

মামলার বাদী ও ভুক্তভোগী শিপন আলী বলেন, আমাকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে কৌশলে অপহরণ করে আসামিরা চৌড়হাস এলাকায় থেকে মিরপুরে নিয়ে যায় এবং আমার পুরুষাঙ্গ কর্তন করেছে। এরপর আমাকে আটকে রেখেছিল তারা৷ পরে আমি পালিয়ে এসেছি। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুল ইসলাম বলেন, কাপড় ব্যবসায়ীর পুরুষাঙ্গ কর্তনের ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলার ৭ আসামিকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। আসামিরা আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

০ কমেন্ট

রিলেটেড পোস্ট

মতামত দিন


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.