মেহেরপুর ও গাংনীতে পালিত হয়েছে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস। তবে ঐক্যের এই দিনে মেহেরপুর জেলা বিএনপির ভেতরে দেখা গেছে স্পষ্ট বিভক্তি। জেলা বিএনপির নেতৃত্বাধীন একটি অংশ ও বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মাসুদ অরুণের অনুসারীরা পৃথকভাবে দিবসটি পালন করেছেন।
আমাদের সূর্যোদয়-এর প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদ- মেহেরপুর : গতকাল শুক্রবার বিকেলে জেলা পরিষদ চত্বরে জেলা বিএনপির উদ্যোগে আলোচনা সভা ও র্যালির আয়োজন করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আনসার উল হক। প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান। তিনি বলেন, “জিয়া পরিবার না থাকলে বাংলাদেশ কোনোদিন ভারতীয় আগ্রাসন থেকে মুক্ত থাকতে পারত না। আজ যে প্রাথমিক মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতে আপনাদের জন্য একটি বড় সুসংবাদ আসবে।” বিশেষ অতিথি ছিলেন সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফয়েজ মোহাম্মদ, মুজিবনগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আমিরুল ইসলাম এবং জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি আলমগীর খান ছাতু।নুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এহান উদ্দিন মনা। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি হাফিজুর রহমান হাফি, এম এ কে খায়রুল বাশার, মীর ফারুক, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রোমানা আহমেদ, ওমর ফারুক লিটন, পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুল লতিফ, জেলা বিএনপির সাবেক আইনবিষয়ক সম্পাদক আবু সালেহ মোহাম্মদ নাসিম, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাহিদুল ইসলাম এবং জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আজমুল হোসেন মিন্টু।

অন্যদিকে, জেলা বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মাসুদ অরুণ ও তাঁর অনুসারীরা আজ শনিবার পৃথকভাবে দিবসটি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন। তাদের আয়োজনে জেলা বিএনপির মূল নেতৃত্বের কেউ অংশ নেবেন না বলে জানা গেছে।গাংনী : মেহেরপুরের গাংনী উপজেলাতেও জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পৃথকভাবে পালিত হয়েছে। শুক্রবার সকালে উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলফাজ উদ্দীন কালু। প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি জাভেদ মাসুদ মিল্টন। প্রধান অথিথি তার বক্তব্যে বলেন, যখনই এই দেশ-জাতী সংকটে পড়েছে তখনই একমাত্র এই জিয়া পরিবারই জীবন বাজি রেখে জনগণের পাশে দাড়িয়েছে। স্বৈরশাসক এরশাদের হাত থেকেও দেশ ও জনগণকে রক্ষা করেছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গাংনী উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলফাজ উদ্দীন কালু। উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দাল হকের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আওয়াল, সাবেক সভাপতি রেজাউল হক, গাংনী পৌর বিএনপির সভাপতি মকবুল হোসেন মেঘলা, সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বিপ্লবসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। আলোচনা সভায় উপজেলা ও পৌর বিএনপিসহ অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করে।

অপর দিকে বিকেলে গাংনী ফুটবল মাঠে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে উপজেলা ও পৌর বিএনপির আরেক অংশ। কাজিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মোল্লার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আমজাদ হোসেন। এ সময় বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীর বিশ্বাস, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোরাদ আলী ও আসাদুজ্জামান বাবলুসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। সভা শেষে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। দলের ঐক্যের আহ্বান জানাতে গিয়ে মেহেরপুর ও গাংনীতে বিএনপির বিভক্ত দুই শিবিরে পৃথক কর্মসূচি পালনের বিষয়টি রাজনৈতিক মহলে নানা আলোচনার জন্ম দিয়েছে। স্থানীয় নেতারা বলছেন, আগামী নির্বাচনের আগে এই বিভাজন কাটিয়ে ওঠা না গেলে সংগঠনের মাঠের শক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে

