Home » শব্দ দূষণ শিশুদের মগজ ধ্বংস করছে

শব্দ দূষণ শিশুদের মগজ ধ্বংস করছে

কর্তৃক Mahabobul Haque Polen
নিজস্ব প্রতিবেদক 28 ভিউ
Print Friendly, PDF & Email

শব্দদূষণ শুধু শ্রবণশক্তি নষ্ট করে না, এটি শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশ, শেখার ক্ষমতা এবং স্মৃতিশক্তিকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘমেয়াদী শব্দদূষণের কারণে শিশুদের মধ্যে উচ্চরক্তচাপ, হৃদরোগ, স্ট্রোক, অনিদ্রা, কিডনি সমস্যা এবং মানসিক জটিলতা বৃদ্ধি পায়। মেজাজ খিটখিটে হয়ে পড়ায় পারিবারিক জীবনেও এর প্রভাব পড়ে। শিশুদের ক্ষেত্রে এই ক্ষতি সবচেয়ে বেশি, কারণ তাদের শরীর ও মস্তিষ্ক এখনও বিকাশের পর্যায়ে থাকে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সমীক্ষা অনুযায়ী, যানবাহনের হর্ন, বাজার ও শিল্প এলাকা থেকে নির্গত শব্দ শিশুদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক। মেহেরপুর শহরের কেন্দ্রীয় এলাকা, বাজারপাড়া, হাসপাতাল এবং স্কুলের আশেপাশে শব্দের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের বাইরে। যদিও স্কুল, কলেজ, হাসপাতালের সামনে হর্ন বাজানো নিষেধ, সচেতনতার অভাবের কারণে এটি কার্যকর হচ্ছে না। কুস্টিয়া ল্যাবকেয়ারের চেয়ারম্যান ডা: সজিবুল হক বলেন, “শব্দদূষণ শুধুমাত্র শ্রবণশক্তি কমায় না, এটি মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতাকে হ্রাস করে, স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দেয় এবং শারীরিক ও মানসিক রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। শিশুদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুতর প্রভাব লক্ষ্য করা যায়, শরীর ও মস্তিষ্কের পূর্ণ বিকাশ ব্যাহত হয়, শেখার ক্ষমতা কমে যায়, এমনকি ভবিষ্যতে সন্তান জন্মদানের সক্ষমতাও প্রভাবিত হতে পারে।” প্রফেসর ফররুক আহমেদ জানিয়েছেন, হাসপাতাল ও আবাসিক এলাকা যেখানে নীরব হওয়ার কথা, সেখানেও রাত-দিন উচ্চশব্দে গাড়ির হর্ন বাজছে। মেহেরপুর পৌরসভা বা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, ৮০ ডেসিবেলের বেশি শব্দ দীর্ঘসময় শোনার ফলে স্থায়ীভাবে শ্রবণশক্তি নষ্ট হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি (ইউএনইপি) অনুসারে, শব্দদূষণ বেশি এলাকায় শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। মেহেরপুর শহরের বিভিন্ন বাজার, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল এবং গুরুত্বপূর্ণ সড়কপথের পাশে যানবাহনের হর্ন বাজানোর শব্দ সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করা গেছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, সরকারি বিধি থাকলেও হর্ন বাজানো নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগ নেই। শহরের সড়কগুলোতে শোরগোল কমানো না গেলে মানসিক ও শারীরিক রোগের ঝুঁকি বাড়বে। বিশেষজ্ঞরা আরও জানিয়েছেন, শিশুদের স্বাভাবিক বিকাশ রক্ষায় জনসচেতনতা বৃদ্ধি, নিয়মিত পরিবেশ মনিটরিং এবং হর্ন-নিষিদ্ধ এলাকা কঠোরভাবে কার্যকর করা অত্যন্ত জরুরি। তারা সতর্ক করেছেন, যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তবে শব্দদূষণ ভবিষ্যতে শিশুদের সুস্থ বিকাশ ও শিক্ষাজীবনে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি আনতে পারে।

০ কমেন্ট

রিলেটেড পোস্ট

মতামত দিন


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.