Home » মেহেরপুর সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে নিরাপত্তাহীনতা

সীমানা প্রাচীর ভাঙা তিন মাস, ঝুঁকিতে ছাত্রীদের নিরাপত্তা

মেহেরপুর সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে নিরাপত্তাহীনতা

কর্তৃক Mahabobul Haque Polen
নিজস্ব প্রতিবেদক 37 ভিউ
Print Friendly, PDF & Email

মেহেরপুর সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের নিরাপত্তা এখন চরম ঝুঁকিতে। বিদ্যালয়ের উত্তর পাশে প্রধান সড়ক সংলগ্ন সীমানা প্রাচীর তিন মাস আগে বিনা কারণে ভেঙে ফেলে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। এরপর থেকে উন্মুক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা ওই অংশ দিয়ে যে কেউ অবাধে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে প্রবেশ করছে, যা শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার্থীরা বারবার প্রাচীর পুনর্নির্মাণের দাবি জানালেও এখনো পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন হয়নি। বরং শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একে অপরের ওপর দায় চাপাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

১৯৫৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যালয়টি মেহেরপুর জেলা শহরের প্রধান সড়কের পাশে অবস্থিত। বর্তমানে প্রায় ৮০০ ছাত্রী এখানে অধ্যয়ন করছে। বিদ্যালয়ের উত্তর পাশে প্রধান ফটকসংলগ্ন অংশে প্রাচীর না থাকায় দিনে-রাতে বিভিন্ন অপরিচিত ব্যক্তি নির্বিঘ্নে প্রবেশ করছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। অভিভাবকদের আশঙ্কা, এভাবে অরক্ষিত থাকলে যে কোনো সময় অবাঞ্ছিত ঘটনার ঘটতে পারে।

বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অরিন রহমান বলেন, “আগে অবসর সময়ে আমরা স্কুল প্রাঙ্গণে খেলতাম। এখন প্রাচীর না থাকায় ভয় পাই, খেলতে পারি না। আমরা এখন একপ্রকার ক্লাসবন্দি হয়ে পড়েছি।” আরেক ছাত্রী মোছা. ত্রয়ী বলেন, “ক্লাস থেকে বের হলে দেখি রাস্তা থেকে অনেকেই তাকিয়ে থাকে। এতে অস্বস্তি লাগে, মনোযোগেও প্রভাব পড়ে।”

ছাত্রীর অভিভাবক সামসুজ্জামান বলেন, “আগে প্রাচীর ও দারোয়ান থাকায় নিশ্চিন্তে মেয়েকে স্কুলে পাঠাতাম। এখন সারাক্ষণ ভয় কাজ করে।”

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফজলুল হক বলেন, “নতুন ভবন নির্মাণে কোনো বাধা না থাকলেও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের ইঞ্জিনিয়ার সীমানা প্রাচীর ভেঙে ফেলেছেন। ভাঙার আগে স্কুল কর্তৃপক্ষের কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি। এখন তারা দায় আমাদের ওপর চাপাচ্ছেন। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী স্কুলের জায়গা দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ার চেষ্টা করছে। জেলা প্রশাসন বিষয়টি জানে।” তিনি আরও বলেন, “প্রাচীর না থাকায় বিদ্যালয়ের নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে। শিক্ষা প্রকৌশলী ও জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছি।”

এ বিষয়ে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী শাহীনুর খানম বলেন, “প্রাচীর ভাঙার পর স্থানীয়রা রাস্তা প্রশস্ত করার দাবি তুলেছেন। এ বিরোধের কারণেই নতুন প্রাচীর নির্মাণে বিলম্ব হচ্ছে। জেলা প্রশাসন বিষয়টি তদন্ত করেছে। দ্রুত সমাধান হলে প্রাচীর নির্মাণ শুরু হবে।”

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) পার্থ প্রীতম শীল বলেন, “এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভালো বলতে পারবেন।” অভিভাবক ও স্থানীয়দের অভিযোগ, জেলা প্রশাসন, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দ্রুত উদ্যোগ না নিলে ছাত্রীদের নিরাপত্তা আরও হুমকির মুখে পড়বে। তারা অবিলম্বে সীমানা প্রাচীর পুনর্নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।

০ কমেন্ট

রিলেটেড পোস্ট

মতামত দিন


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.