Home » ডা. ফারুক হোসেনের বিরুদ্ধে টেস্ট বাণিজ্যের লিখিত অভিযোগ

ডা. ফারুক হোসেনের বিরুদ্ধে টেস্ট বাণিজ্যের লিখিত অভিযোগ

কর্তৃক Mahabobul Haque Polen
নিজস্ব প্রতিবেদক 33 ভিউ
Print Friendly, PDF & Email

দৈনিক আমাদের সূর্যোদয় পত্রিকায় গত কয়েকদিন আগে প্রকাশিত শিরোনাম “মোল্লার ডায়াগনস্টিকের দালাল সরকারি ডাক্তার” প্রকাশের পর মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. ফারুক হোসেন বিরুদ্ধে নতুন করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে টেস্ট রেফার ও সরকারি প্রেসক্রিপশনের অপব্যবহারের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগকারী ইসমোতা নামের এক ভুক্তভোগী নারী রবিবার (৫ অক্টোবর) সকালে গাংনী উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন—৩০ সেপ্টেম্বর তার অসুস্থ সন্তান আদিলকে দেখা করতে ডা. ফারুকের কাছে নিয়ে গেলে চিকিৎসক শিশুটির জন্য কিছু পরীক্ষার পরামর্শ দেন। তিনি পরীক্ষাগুলো ডাক্তারের নির্দেশিত বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি না করে অন্য একটি প্রতিষ্ঠানে করেন। পরীক্ষা করানোর পর পুনরায় চিকিৎসকের কাছে যান। রিপোর্ট দেখে ডা. ফারুক ক্ষুব্ধ হন এবং অসৌজন্যমূলক আচরণ করে এক পর্যায়ে সবার সামনে শিশুটির প্রেসক্রিপশনটি ছিঁড়ে ফেলেন।

স্থানীয় সচেতন মহল ও হাসপাতালের নির্দিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এটি একক ঘটনা নয়। তাদের দাবি—কয়েক বছর ধরে হাসপাতালের কিছু চিকিৎসক নির্দিষ্ট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রেফার করে কমিশনভিত্তিক টেস্ট বাণিজ্য চালিয়ে আসছেন। পরবর্তী “অভ্যন্তরীণ তদন্তে” অভিযুক্ত চিকিৎসকরা প্রায়ই দায়মুক্তি পেয়ে যান বলে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ এবং সরকারের প্রতি অনাস্থা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

অভিযোগ দ্রুত ন্যায়সঙ্গতভাবে তদন্ত না হলে সরকারি হাসপাতালের ওপর মানুষের আস্থা গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে—এমন ভয় প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। তারা দাবি করেছেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে একটি নিরপেক্ষ এবং স্বচ্ছ তদন্ত প্রয়োজন যাতে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যায়।

এই বিষয়ে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুল্লাহ আল আজিজ জানিয়েছেন, “লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তিনি আশ্বস্ত করেন যে তদন্তটি দ্রুত ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করা হবে।

অপরদিকে হাসপাতাল ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অভ্যন্তরীণ নিয়ম এবং রোগী অধিকার রক্ষায় যে ধারা রয়েছে তা অনুসরণ করা হবে কি না—এ আলোচনা ইতোমধ্যে এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়া ছড়িয়েছে। রোগীরা এখন নিরাপদ ও স্বচ্ছতার দাবি তুলছেন যাতে আর কেউ নির্দিষ্ট ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে অনৈতিকভাবে বাধ্য না হয়।

স্থানীয় সমাজকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর একাংশ সরাসরি ইউএনওর তত্ত্বাবধানে তদন্তেরও দাবি তুলেছেন। তারা বলছেন, এমন অভিযোগের দ্রুত, দৃশ্যমান ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না দিলে সরকারি সেবা ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার করা কঠিন হবে।

০ কমেন্ট

রিলেটেড পোস্ট

মতামত দিন


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.