চুয়াডাঙ্গায় অনলাইন জুয়ার 1xBet-এর মাস্টার এজেন্টসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল। এ সময় তাদের কাছ থেকে অনলাইন জুয়ার কাজে ব্যবহৃত একাধিক দামী স্মার্টফোন ও সিম কার্ড উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত ফোনে 1xBet, Reddy, MelBet, MobCash, Telegram, Binance, bKash, CellFin, Nagad, Rocket অ্যাপ্লিকেশনগুলো লগইন অবস্থায় পাওয়া যায়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর দাসপাড়া গ্রামের শ্রী দয়াল দাসের ছেলে শুভংকর কুমার দাস (২৩), ও একই উপজেলার ডুগডুগি গ্রামের মো. সাহাদৎ ওরফে সাধুর ছেলে হাফিজুল ইসলাম ওরফে হ্যাপি (২৫)।
শুক্রবার (৫ সেপ্টম্বর) বিকেল ৪টার দিকে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে, শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর দাসপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানটি পরিচালনা করেন সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেলের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক সামসুদ্দোহা। তার নেতৃত্বে উপ-পরিদর্শক সৌমিত্র সাহা, মুহিদ হাসান এবং সহকারী উপ-পরিদর্শক রজিবুল, রমেন ও আরিফ অংশ নেন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শুভংকর 1xBet-এর মাস্টার এজেন্ট হিসেবে স্থানীয় তরুণদের টার্গেট করে তাদের মোবাইলে জুয়ার বিভিন্ন অ্যাপ ইন্সটল করে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে দিতেন। এতে যুব সমাজ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। কেউ কেউ ঋণ শোধ করতে না পেরে আত্মহত্যার পথও বেছে নিচ্ছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিতে তাদের দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা বিপিএম-সেবা বলেন, বাংলাদেশে প্রচলিত 1xBet, MelBet সহ যতগুলো বেটিং সাইট রয়েছে তার বেশিরভাগই রাশিয়া থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) মাধ্যমে নির্দিষ্ট নম্বরে টাকা পাঠালে ব্যালেন্স যোগ হয়ে যায় এবং দেশের টাকা বাইরে চলে যায়। ব্যালেন্স যুক্ত হওয়ার পরে সাইটগুলোতে বিভিন্ন ধরনের জুয়া খেলার যে অপশন রয়েছে সেগুলো থেকে যে কোনো একটি পছন্দ অনুযায়ী অ্যাকাউন্ট হোল্ডার খেলতে পারে। বিভিন্ন দেশে স্থানীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণের জন্য এজেন্ট নিয়োগ করা হয়। জুয়ার এজেন্টরা অনলাইন জুয়া সংশ্লিষ্ট অ্যাপস পরিচালনা করতে পারে টেকনিক্যালি দক্ষ এমন লোক নিয়োগ দেয়। সরকার অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে সাজাসহ মোটা অংকের আর্থিক জরিমাণার বিধান রেখে সাইবার সুরক্ষা আইনটি অনুমোদন করেছেন। পরিশেষে, তিনি অনলাইন জুয়াসহ সব অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সবার সহযোগিতা ও অনলাইন জুয়ায় আকৃষ্ট যুবকদের ধ্বংসের দিক থেকে ফিরে এসে স্বাভাবিক জীবনযাপন করার অনুরোধ জানান।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে দামুড়হুদা মডেল থানায় সাইবার সুরক্ষা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, অনলাইন জুয়ার বিরুদ্ধে প্রতিটি থানা এলাকায় অভিযান অব্যাহত থাকবে।