কুষ্টিয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) অন্তত তিনটি বিভাগের নিজস্ব গবেষণাগারে কাজ করতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা দপ্তরের বিরুদ্ধে। বিভাগের অনুমতি থাকা সত্ত্বেও নিরাপত্তার কথা বলে শিক্ষার্থীদের ল্যাব থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে বলে দাবি বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত শিক্ষার্থীদের।
এ ঘটনায় আজ শনিবার এক বিবৃতিতে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ইবি সায়েন্স ক্লাব। গবেষণার কাজে নিরবচ্ছিন্ন ল্যাব ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানান তাঁরা। সায়েন্স ক্লাবের দাবি, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বিভাগ থেকে ওপরের নির্দেশনার কথা বলে রাত ৮টার পর এসব ল্যাবে শিক্ষার্থীদের কাজ করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এমনকি বিভাগের অনুমতি থাকা সত্ত্বেও শিক্ষার্থীদের ল্যাব থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংসহ একাধিক বিভাগে নিজস্ব গবেষণাগার রয়েছে। যেখানে বিভাগের শিক্ষার্থীরা দিন-রাত স্লট অনুযায়ী গবেষণাভিত্তিক কাজ করেন। কিন্তু সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বিভাগ নিরাপত্তার কথা বলে রাত ৮টার পর শিক্ষার্থীদের ল্যাবে কাজ করতে বাধা দিচ্ছে।
এসব বিভাগের শিক্ষার্থীরা জানান, উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু প্রশাসন রাত ৮টার পর গবেষণাগার বন্ধ করে দিচ্ছে। এ ধরনের পদক্ষেপ শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন ও গবেষণাকেন্দ্রিক প্রয়াসে সরাসরি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। শিক্ষা ও গবেষণার পথ কখনোই রুদ্ধ হতে পারে না।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগের সিনিয়র শিক্ষার্থী আবু রেজা বলেন, ‘আমরা এই অন্যায়ের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি—ল্যাব ব্যবহারে বাধা দেওয়া বন্ধ করা হোক। গবেষণার পরিবেশ নষ্ট করার যেকোনো প্রয়াস প্রতিহত করা হবে। শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস চাই—শুধু কাগজে কলমে নয়, বাস্তবেও।’
জানতে চাইলে এ বিষয়ে নিরাপত্তা দপ্তরের প্রধান মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিভাগের অনুমতি থাকলে আমরা সম্পূর্ণ সহযোগিতা করব। কিন্তু বিভাগের অনুমতি না থাকলে আমরা কাউকে থাকতে দিতে পারি না।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এ ধরনের কোনো অফিশিয়াল নোটিশ জারি হয়নি। ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার স্বার্থে নিরাপত্তা দপ্তর রাত ৮টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সবকিছু বন্ধ কর দেবে, এটাই স্বাভাবিক। সে জন্যই তারা ছেলেপেলেদের বের করে দিয়েছে। এখন যদি ৯টার পরও কেউ থাকতে চায়, তাহলে তাদের প্রক্টর বরাবর আবেদন করতে হবে।’